নেত্রকোনার বারহাট্টায় লালন-পালন করা একটি ষাঁড়ের নাম ‘হাওর অঞ্চলের রাজা’। কালো ও আংশিক সাদা ষাঁড়টির দৈর্ঘ্য ৭ ফুট ৬ ইঞ্চি এবং উচ্চতা ৫ ফুট ৩ ইঞ্চি। ওজন প্রায় ৪০ মণ। ঈদুল আজহার আগেই ষাঁড়টি বিক্রি করতে চান এর মালিক মো. রিপন মিয়া। দাম চাচ্ছেন ১৫ লাখ টাকা। ইতিমধ্যে ১১ লাখ টাকা দাম বলেছেন ক্রেতারা।
জানা গেছে, উপজেলার বারহাট্টা সদর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের মো. রিপন মিয়া ষাঁড়টিকে লালন-পালন করছেন। রিপনের খামারে আরও ৩০-৩৫টি গরু আছে। ৩ বছর আগে ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়টি ৩ লাখ টাকায় ক্রয় করে লালন-পালন করছেন। বিশাল আকৃতির ষাঁড়টি দেখার জন্য প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ভিড় করছেন তাঁর বাড়িতে। ষাঁড়টি হাটে আনা-নেওয়া কষ্টকর। তাই বাড়ি থেকেই রাজাকে বিক্রি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রয়োজনমতো খাবার ও পরিচর্যা করায় গরুটির আকৃতি বাড়তে থাকে। ডিজিটাল স্কেলের মাধ্যমে গরুটির ওজন মাপা হয়েছে। এবার কোরবানির উপলক্ষে গরুটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন খামারি রিপন।
রিপন বলেন, ‘তিনজন লোক গরুটিকে দীর্ঘদিন ধরে দেখাশোনা করে। এটির প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় রয়েছে ছয় কেজি ভেজানো ছোলা, গমের ভুসি, কলা, আপেল ও খইল। ফ্যানের বাতাস ছাড়া থাকতে পারে না এই ষাঁড়টি। বিদ্যুৎ না থাকলেও গরুটির জন্য বিকল্প ফ্যানের ব্যবস্থা করা হয় আমাকে। প্রতিদিন তিনবার গোসল করাতে হয়। গোসলের পর আবার শুকনা কাপড় দিয়ে শরীরের পানি মুছে ফেলতে হয়, যাতে ঠান্ডা না লাগে।’
রিপন আরও বলেন, ‘গরুটির দাম চাচ্ছি ১৫ লাখ টাকা। এখন পর্যন্ত ক্রেতারা ১১ লাখ টাকা দাম বলছেন। গরুটিকে পালতে গিয়ে আমার ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তাই উপযুক্ত দাম পেলেই এটিকে বিক্রি করব।’
মজিদ নামের একজন বলেন, ‘আমার ৬০ বছরের জীবনে এত বড় গরু আর দেখিনি। রিপনের গরুটি দেখতে প্রতিদিনই লোকজন আসছেন। আশা করি, সে উপযুক্ত দামে গরুটি বিক্রি করতে পারবে।’
বারহাট্টা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শিহাব উদ্দিন বলেন, উপজেলায় ২৫টি খামার রয়েছে। এর মধ্যে নিবন্ধনকৃত খামার ৮টি। এবার মোট কোরবানির উপযুক্ত পশু রয়েছে ৩ হাজার ৯২টি। তিনি আরও বলেন, গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার সব খামারিকেই প্রশিক্ষণ ও সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।