সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজামণ্ডপে হামলা, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও নির্যাতনের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। গতকাল সোমবার ক্যাম্পাসে ভিন্ন ভিন্ন ব্যানারে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়।
এদিন বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে মানববন্ধনের আয়োজন করে সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই দেশে ধর্মনিরপেক্ষতার বীজ রোপণ করেছিলেন। এটি এখন আর খুঁজে পাওয়া যায় না। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান এসব পরিচয়ের থেকেও আমাদের বড় পরিচয় হচ্ছে আমরা মানুষ। আমরা সনাতন ধর্মাবলম্বী যারা আছি, তারা ১৯৪৭-এর দেশভাগের সময় দেশ ত্যাগ করিনি, মুক্তিযুদ্ধের সময়ও দেশ ছেড়ে যাইনি। তার অর্থ এই যে আমরা এই দেশেই থাকতে চাই। তাহলে কেনইবা আমাদের সঙ্গে এমনটা হচ্ছে? কেনইবা আমাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে?’
বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মানিক রায় অভির সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে বক্তারা আরও বলেন, ‘মানুষ পুড়িয়ে মারা কোনো ধর্মেরই উদ্দেশ্য হতে পারে না। যারা ধর্মের নামে এ ধরনের কাজ করছেন, অন্য ধর্মকে সম্মান করছেন না, তাঁরা আসলে নিজের ধর্মকেই মনের মধ্যে লালন করতে পারছেন না। তাই আগে নিজের ধর্মকে ভালোবাসুন। একটা সময়ে এ দেশে মোট জনশক্তির ২২ শতাংশ ছিল সনাতন জনগোষ্ঠীর। আর এখন সেটি ৬ শতাংশে নেমে এসেছে। এভাবে চলতে থাকলে দেশ একসময় আফগানিস্তানের মতো হয়ে যাবে। যেটা আমরা চাই না। আমরা এই রাষ্ট্রের নাগরিক অধিকার নিয়ে বাঁচতে চাই।’
কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের সনাতন ধর্মাবলম্বী শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। এদিকে একই দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে রাবি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।