গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় এ বছর আখের ভালো ফলন হয়েছে। এখন চাষিদের ব্যস্ততা চলছে আখমাড়াই শেষে রস দিয়ে গুড় তৈরিতে। গুড় বিক্রি করে ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন তাঁরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার আটটি ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আখ চাষ হয়েছে বরমী ইউনিয়নে। এরপরে মাওনা ইউনিয়নে। সকালে পুব আকাশে সূর্য ওঠার আগেই আখচাষিরা লেগে পড়েন খেত থেকে আখ কাটা, মাড়াই আর গুড় তৈরির কাজে। মাড়াই ও গুড় তৈরির কাজ চলে রাত পর্যন্ত।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বরমী ইউনিয়নের বরামা গ্রামে একদিকে চলছে আখ কাটা, মাড়াই ও গুড় তৈরির কাজ। যন্ত্রের মাধ্যমে আখ মাড়াই করে বের করা হচ্ছে রস। এরপর রস ছাঁকন পদ্ধতি শেষে দেওয়া হচ্ছে বড় চুলায় রাখা পাত্রে। টিনের তৈরি এ পাত্রে রাখা রস আগুনে জ্বাল দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে গুড়।
আখ মাড়াই করছেন বরামা গ্রামের আখচাষি মো. সারফুল ইসলাম। তিনি বলেন, এ বছর সাড়ে তিন বিঘা জমিতে আখ চাষ করেছেন। কিছু আখ বিক্রি করেছেন মাড়াই করা ছাড়া। বাকি দুই বিঘা জমির আখমাড়াই শুরু করেছেন। এরপর রস দিয়ে গুড় তৈরি করে বাজারে বিক্রি করেন। তাতে ভালো লাভ হচ্ছে বলে জানান সারফুল।
একই গ্রামের আবুল কালাম বলেন, একসময় এই এলাকায় প্রচুর পরিমাণে আখ চাষ করা হতো। অনেক বছর ধরে আখ চাষ বন্ধ ছিল। ইদানীং এই অঞ্চলে আবার আখ চাষ শুরু হয়েছে। এ বছর চার বিঘা জমিতে আখ চাষ করা হয়েছে। এ ছাড়া অনেকেই আখ চাষ করেছেন। এতে চাষিরা লাভবান হচ্ছেন বলে জানান তিনি।
মাওনা ইউনিয়নের বদনীভাঙা গ্রামের আখচাষি মো. শাহজাহান বলেন, আগের দিনে আখ মাড়ানোর কাজে ব্যবহৃত হতো গরু, মহিষ; বর্তমানে আধুনিক পদ্ধতির মাধ্যমে সহজে আখমাড়াইয়ের কাজ করা হয়। আখ চাষ লাভবান হওয়ায় অনেকেই আখ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
বরমী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ইউনিয়নের বরামা পোষাইদ গ্রামে প্রচুর পরিমাণে আখ চাষ হয়েছে। ইউনিয়নের গুড়ের চাহিদা পূরণ করে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে এ গুড় সরবরাহ করা হচ্ছে। এই অঞ্চলের আখে প্রচুর পরিমাণে রস হয়। স্বাদে আর মানেও সেরা।
শ্রীপুর উপজেলা কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা মো. কবির হোসেন বলেন, এ বছর শ্রীপুর উপজেলায় গত বছরের চেয়ে বেশি জমিতে বিভিন্ন জাতের আখ চাষ হয়েছে। আখ চাষে লাভবান হওয়ায় অনেক চাষি আখ চাষে আগ্রহী হচ্ছে। আখ চাষ করতে কৃষি অফিসের পক্ষে চাষিদের নানা ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।