নানা ধরনের ফসল উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় হচ্ছে রপ্তানিযোগ্য নতুন জাতের জাপানি মিষ্টি আলুর চাষ। পদ্মা নদীর তীরবর্তী পালেরচর, কুন্ডেরচর, পূর্বনাওডোবা, নাওডোবা ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে দেখা মিলছে ওকিয়ানা, কোকেই ১৪ এবং মুরাসাকি নামের জাপানি জাতের আলুর। কিছুদিন পরেই খেত থেকে তোলা হবে এসব আলু।
জাজিরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জাজিরাতে পরীক্ষামূলক ভাবে ৩০০ শতাংশ জমিতে জাপানের ৩ জাতের আলু চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রথম চাষাবাদেই সফলতা পাওয়া গেছে।
পুষ্টি মানে সমৃদ্ধ মিষ্টি আলুতে প্রচুর পরিমাণ বিটা ক্যারটিন, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি ৬, ফাইবার রয়েছে। মিষ্টি আলু সাধারণত সাদা ও লাল চামড়ার হয়ে থাকে। এর মধ্যে রঙিন আবরণের মিষ্টি আলুর পুষ্টি মানে অপেক্ষাকৃত বেশি। একটি মাঝারি মানের আলুতে আছে ১০০ ক্যালরি শক্তি , ২ গ্রাম প্রোটিন, ২২ গ্রাম শ্বেতসার, ৩ গ্রাম আঁশ।
জাপানি জাতের ওকিয়ায়ান মিষ্টি আলু চাষ করা আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার বলেন, ‘আগে আমারা যে আলু লাগাইতাম তার ফলন কম হইত আবার দাম ও কম পাইতাম। কিন্তু এই জাপানি আলুর রঙটা খুব সুন্দর এবং বিক্রি করলে ভালো দাম পামু আশা করি।’
পালের চর ইউনিয়নের কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমাগো দেশে ত আগে এই কালারের মিষ্টি আলু দ্যাহি নাই। এই বছর কৃষি অফিস থেকে এই বিদেশি মিষ্টি আলু চাষাবাদে সাহায্য করায় ফলন ভালো আইছে। আমাগো দেইখা এলাকায় অনেক কৃষক ভিনদেশি এই আলু চাষ করতে চাইতাছে।’
জাজিরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. জামাল হোসেন বলেন, ‘মিষ্টি আলু অত্যন্ত পুষ্টি মান সমৃদ্ধ একটি কন্দাল ফসল। কিন্তু আমাদের দেশে এটি খাওয়ার খুব বেশি প্রচলন নেই। পদ্মা সেতু কেন্দ্রিক যে অর্থনৈতিক কর্ম চাঞ্চল্য শুরু হবে এতে নতুন সংযোজন হতে পারে আমাদের এই মুরাসাকি, ওকিয়ানা এবং কোকেই ১৪ জাতের মিষ্টি আলু। ফলে একদিকে কৃষক লাভবান হবেন, অন্য দিকে খাদ্যতালিকায় এর অন্তর্ভুক্ত আমাদের পুষ্টি মান বাড়াতে সহায়তা করবে।’
উল্লেখ্য কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় জাপানি জাতের মিষ্টি আলুর চাষ করা হয়েছে।