দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার গ্রামাঞ্চলে বেড়েছে ‘আত্মহত্যা’র প্রবণতা। বিশেষ করে তরুণ ও তরুণীদের মধ্যে এ প্রবণতা বেশি দেখা গেছে। তবে বয়স্কদের মধ্যে যে কম, তা বলার সুযোগ নেই। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ২৯টি ‘আত্মহত্যা’র চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সৈয়দ তৌহিদুল আলমের মতে, বিষণ্ণতা ও চিন্তাগ্রস্ত মানুষের মধ্যে একধরনের হতাশা কাজ করে। এ অবস্থা থেকে মুক্তির পথ খুঁজতে গিয়ে কেউ কেউ আত্মহননের পথ বেছে নেন।
তবে জনপ্রতিনিধি ও এনজিওকর্মী কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে সচেতনতা তৈরি করে এ ধরনের ব্যক্তিদের হতাশা দূরীকরণে ভূমিকা নিতে পারেন বলে জানান ফুলবাড়ী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান।
তাঁর মতে, করোনাকালে এ ধরনের মৃত্যু বেশি লক্ষ করা গেছে। পারিবারিক অশান্তি, দারিদ্র্য, মানসিক বিকারগ্রস্ততা থেকে অনেকেই ‘আত্মহত্যা’র পথ বেছে নেন। এ ছাড়া সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে কাজে লাগিয়ে জীবনের মূল্যবোধ নিয়ে উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালার মাধ্যমে এ বিষয়ে মানুষকে সচেতন করলে সমস্যা সমাধান অনেকটাই সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঋণের বোঝা, অর্থনৈতিক সংকট, পারিবারিক অশান্তি ও দাম্পত্যকলহের কারণে এ ঘটনা ঘটছে। তবে থানায় করা অপমৃত্যু মামলা সূত্রে পাওয়া তথ্যের বাইরেও আরও অনেক ঘটনা রয়েছে, যা মামলা না-হওয়ায় জানা যায়নি।
ফুলবাড়ী থানা সূত্র অনুযায়ী, চলতি বছরের ১০ মাস ২২ দিনে ১৬ জন গলায় ফাঁস নিয়ে এবং বিষপানে ৬ জন আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন। এঁদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও তরুণী। এর মধ্যে ১৫-৩০ বছরের মধ্যে ২২ জন, ৪৫ ঊর্ধ্ব ৮ জন।
ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশ্রাফ ইসলাম বলেন, গত ১০ মাসে থানায় ২৯টি ‘আত্মহত্যা’ বা অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রেকর্ড করেছে পুলিশ। এর প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।