কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় লেপ-তোশক কারিগরেরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। বছরের এ সময়টাতে খুবই ব্যস্ত থাকতে হয় তাঁদের। যেন দম ফেলার সুযোগ নেই। বছর জুড়ে অলস সময় কাটলেও, এখন নাওয়া-খাওয়া ভুলে কাজ করছেন তাঁরা। কারণ এই মৌসুমে যা বেচা-কেনা হয় তা দিয়েই চলে সারা বছর।
পাকুন্দিয়া পৌর বাজারে ১০ থেকে ১২টি লেপ-তোশকের দোকান রয়েছে। বংশ পরম্পরায় এ পেশার সঙ্গে জড়িত আছেন এসব দোকানের মালিক ও কারিগরেরা। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বছরের অন্য সময়গুলোতে টুক-টাক বেচাকেনা হয়। যা দিয়ে তাঁদের কোনো রকমে সংসার চালাতে হয়। তা ছাড়া করোনা মহামারির কারণে গত দুবছর বেকায়দায় রয়েছেন তাঁরা। কাজ কম হওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে খুবই কষ্টে দিন কাটছে তাঁদের। এ সবকিছু ভুলে এখন তারা ব্যস্ত সময় পার করছেন।
লেপ-তোশক কারিগর ও বিক্রেতারা জানান, শীত মৌসুমেই তাদের ব্যবসা। অন্য মৌসুমে শুধু অপেক্ষা। এ মৌসুমে যে কাজ ও বেচাকেনা হয়, তা দিয়ে সংসার মেটানোর পাশাপাশি কিছু জমা রাখতে হয়। বছরের বাকি সময়টাতে সেই জমা করে টাকা দিয়ে কোনো রকমে সংসার চালাতে হয়। এ বছর কাজের চাপ বেশি। কারিগরের মজুরি, কাপড় ও তুলার দামও বেড়েছে। এ জন্য এবার লেপ-তোশকের দাম কিছুটা বেশি।
সরেজমিনে লেপ-তোশকের দোকানে গিয়ে দেখা গেছে, কারিগরেরা সব ভুলে কাজে মন দিয়েছেন। যেন তাদের কথা বলার সময় নেই। দুপুর গড়িয়ে গেলেও খাওয়া ভুলে কাজ নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন।
এ সময় কথা হয় সাইফুল ইসলাম নামের একজন কারিগরের সঙ্গে। তিনি বলেন, একেকটি লেপ তৈরিতে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা সময় লাগে। দিনে পাঁচ থেকে ছয়টি লেপ বানানো সম্ভব।
সোনা মিয়া পাঠান নামের পৌর সদর বাজারের একজন লেপ-তোশক বিক্রেতা বলেন, তিনি বংশ পরম্পরায় এ পেশার সঙ্গে জড়িত। তাঁর দুটি দোকান রয়েছে। দুটি দোকানে ৪ থেকে ৫ জন শ্রমিক রয়েছে। বছরের অন্য সময়ে বেচা কেনা নেই বললেই চলে। তবে অন্য বছরের তুলনায় এবার কাজের অর্ডার বেশি পাওয়া যাচ্ছে। মৌসুমের শুরুতেই যেভাবে চাহিদা পাওয়া যাচ্ছে, তাতে কাজের চাপ আরও বাড়বে।
সোনা মিয়া আর বলেন, ‘কাপড়ের দাম বেড়েছে। বেড়েছে শ্রমিকের মজুরিও। তাই এবার লেপ-তোশকের দাম কিছুটা বেশি। প্রতিটি লেপ সর্বনিম্ন ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা আর প্রতিটি তোশক ২২০০ থেকে ২৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।