বড়দিনের আগে বিশেষজ্ঞরা যে ভয়টা করেছিলেন, সেটিই হলো। অতি সংক্রামক ওমিক্রন ধরন দ্রুত ছড়িয়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অনেক দেশে এক দিনে করোনাভাইরাসের রেকর্ড সংক্রমণ হয়েছে। সাপ্তাহিক গড়েও নতুন রেকর্ড দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এরই মধ্যে গতকাল বুধবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, এক সপ্তাহে সংক্রমণ বেড়েছে ১১ শতাংশ। সামগ্রিকভাবে ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন হিসেবে চিহ্নিত ওমিক্রনে সংক্রমণের ঝুঁকি এখনো অনেক বেশি বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
পরিসংখ্যানভিত্তিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যমতে, গত মঙ্গলবার সারা বিশ্বে এক দিনে ১২ লাখ ২২ হাজার ৩৯৫ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, যা সংক্রমণের শুরু থেকে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। রেখাচিত্রে দেখা যায়, গত কয়েক দিন ধরেই দৈনিক শনাক্ত ১০ লাখের আশপাশে রয়েছে। বড়দিনের আগে ১০ লাখ ছাড়ালেও পরদিন শনাক্ত কমে যায়। পরীক্ষা কম হওয়ায় এ সংখ্যা কমে গেছে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। পরীক্ষা বাড়ানোর পর রেকর্ড হলো।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রে এক দিনে ৫ লাখ ১২ হাজার ৫৫৩ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়। দৈনিক শনাক্তে আগের দিন রেকর্ড হওয়ার পর গতকাল সে রেকর্ড ভেঙে যায়। দেশটির স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, গত সোমবার এক দিনে ৪ লাখ ৪০ হাজার ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হন। সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, সাপ্তাহিক গড় সংক্রমণ প্রায় ২ লাখ ৬৭ হাজার। চলতি বছর এর আগে কখনো এর চেয়ে বেশি সাপ্তাহিক গড় ছিল না।
রেকর্ড শনাক্ত হয়েছে ইউরোপের কয়েকটি দেশেও। এর মধ্যে গতকাল বুধবার সবচেয়ে বেশি শনাক্ত হয়েছে ফ্রান্সে, ২ লাখ ৮ হাজার। গত মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যে শনাক্ত ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৩ জন। ইতালিতে আক্রান্ত হয়েছে ৭৮ হাজার। রেকর্ড শনাক্ত হয়েছে গ্রিস এবং পর্তুগালেও। সোমবার রেকর্ড শনাক্ত হয় ডেনমার্ক এবং আইসল্যান্ডে।
আগামী বছর ফ্রান্সসহ ইউরোপের অনেক দেশে সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে। ফরাসি স্বাস্থ্যমন্ত্রী অলিভার ভেরান বলেন, সবকিছু বিবেচনা করে বোঝা যাচ্ছে জানুয়ারির শুরুতে ফ্রান্সে দৈনিক সংক্রমণ ২ লাখ ৫০ হাজারে পৌঁছাতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তদের মধ্যে ৫৮ শতাংশই ওমিক্রনে আক্রান্ত। ওয়াশিংটন ডিসি ওমিক্রনে সংক্রমণের কেন্দ্রে রয়েছে। ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে ম্যারিল্যান্ড এবং ভার্জিনিয়ায়।
ওমিক্রন ধরন স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে সংকটে ফেলতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির ইউরোপে করোনাবিষয়ক ব্যবস্থাপক ক্যাথরিন স্মলউড জানান, প্রাথমিক পর্যালোচনায় এ ধরনে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি মৃদু মনে হলেও হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। বিশেষ করে টিকা না নেওয়াদের ক্ষেত্রে।