প্রথম ওয়ানডের আগে অনুশীলনেই আভাসটা পাওয়া গিয়েছিল। ম্যাচের দুদিন আগে হওয়া সেই অনুশীলনে সম্ভাব্য যে টপ অর্ডার ব্যাটিং অনুশীলন করেছে, সেখানে ছিলেন না সাকিব আল হাসান। তিনি ব্যাটিং অনুশীলন করেছেন টপ অর্ডারের পালা শেষে।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পরশু প্রথম ওয়ানডেতেও সেই অনুশীলনেরই পুনরাবৃত্তি। সাকিব ব্যাটিং করেছেন মিডল অর্ডারে। ব্যাটিং অর্ডারের মাঝে নামা সাকিবের কাছে অবশ্য নতুন নয়। বরং ক্যারিয়ারের বেশির ভাগ সময় এই বাঁহাতি ব্যাটার মিডল অর্ডারেই ব্যাটিং করেছেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচে খেলেছেন সাকিব, এই জায়গায় ১২৬ ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ৩৮৬০ রান করেছেন। গড় ৩৫.০৯, ৯ ওয়ানডে সেঞ্চুরির পাঁচটিই এই পজিশনে।
তবে ২০১৮ থেকে একপ্রকার নিজের আগ্রহেই তিনে ব্যাটিং করছেন সাকিব। টপ অর্ডারে ব্যাটিং নিয়ে ২০১৯ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কার্ডিফে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করে তিনি বলেছিলেন, ‘(দলের) সবাইকে আমাদের বোঝাতে হয়েছিল। যদি রান না করতাম, তবে তারা ভাবত পাঁচেই আমার নামা উচিত। পাঁচে নামতেও আমাকে অনেক মানুষকে বোঝাতে হয়েছে। হ্যাঁ, এখন যেখানে নামছি কাজে দিচ্ছে।’
‘প্রিয়’ তিন নম্বর পজিশনে সাকিব এখনো পর্যন্ত ৩৬ ইনিংসে ৪৯.৬৪ গড়ে রান করেছেন ১৫৩৯। বোঝাই যাচ্ছে, তিনে কতটা সফল সাকিব। এই পজিশনে তাঁর চেয়ে বেশি রান নেই বাংলাদেশের আর কারও। ২০১৯ বিশ্বকাপে সাকিবের অবিশ্বাস্য ব্যাটিংও এ তিনে খেলেই।
বাংলাদেশের ক্রিকেটে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের প্রথম পর্ব শেষ হওয়ার পর তিনে ব্যাটিং শুরু করেছিলেন সাকিব। দ্বিতীয় পর্বে হাথুরু ফেরার পর প্রথম ম্যাচেই আবার মিডল অর্ডারে ফিরে গেলেন সাকিব। প্রথম ওয়ানডে শেষে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধি হয়ে নাজমুল হোসেন শান্ত অবশ্য এটাকে দলের কৌশল হিসেবেই বলেছেন। সাকিব কেন পাঁচে নেমেছেন এই প্রশ্নের উত্তরে শান্ত বলেছেন, ‘ডানহাতি-বাঁহাতি সমন্বয়ের কারণেই সাকিব ভাই পাঁচে নেমেছেন।’ গতকাল বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও একই কথা বলেছেন সাংবাদিকদের, ‘তখন শান্ত যদি
আউট হতো তাহলে অবশ্যই চারে ও নেমে যেত।’
তবে এক ম্যাচেই সাকিবের তিন নম্বর ব্যাটিং পজিশনের শেষ দেখতে চান না আশরাফুল। তিনি বলেন, ‘একটা ম্যাচ দিয়ে তো আসলে বিবেচনা করা যায় না। আরও অন্তত দুই-তিন ম্যাচ গেলে ওকে নিয়ে দলের পরিকল্পনা বোঝা যাবে।’ আশরাফুলের মতো একই মত নাজমুল আবেদীন ফাহিমেরও। বিকেএসপির এই ক্রিকেট উপদেষ্টা সাকিবের মিডল অর্ডারে খেলা নিয়ে বলেছেন, ‘আরও খেলুক, তারপর পরিকল্পনা বোঝা যাবে। তবে এটা ঠিক, দলের ভালোর পরিকল্পনা থেকেই ওকে হয়তো একটু নিচে নামানো হয়েছে।’
সাকিব এখন থেকে নিয়মিতই পাঁচে বা মিডল অর্ডারে খেলবেন, নাকি গত ম্যাচের মতো পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে? এ প্রশ্নে পাপন বলেছেন, ‘আমি নিজে ওকে জিজ্ঞেস করেছি তিনে ব্যাটিং করতে চাও কি না। সে বলেছে দলের জন্য যেখোনে দরকার সেখানে করতে রাজি, এটা পরিষ্কার বার্তা।’