কার্যালয়ে টেলিফোন আছে। প্রতি মাসে বিলও দিতে হয়। তবু তারাগঞ্জের অনেক সরকারি কর্মকর্তা তাঁদের কার্যালয়ের টিঅ্যান্ডটি ফোন নম্বরটি ভুলতে বসেছেন। এতে অবশ্য তাঁদের দোষ দেওয়া যায় না। কারণ উপজেলার বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ের টেলিফোনগুলো প্রায় তিন বছর হতে চলল নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা স্থানীয় এক্সচেঞ্জ কার্যালয়ে বারবার আবেদন করে বিরক্ত।
গত সোমবার উপজেলা পরিসংখ্যান কার্যালয়ে গেলে জুনিয়র পরিসংখ্যান সহকারী মাহাবুব আলম আক্ষেপ করে বলেন, ‘টেলিফোন সংযোগ সারা বছর নষ্ট থাকে। ৬ থেকে ৭ মাস পরপর বিলের কাগজ নিয়ে এসে বিল নিয়ে যায়। টেলিফোন ঠিক করার কথা বললে ঢাকার ফোন নম্বর দেয়। টেলিফোনে কথা না হলেও তাদের টাকা দিতে হয়। এ জন্য সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছি।’
তারাগঞ্জ টেলিফোন এক্সচেঞ্জ সূত্রে জানা যায়, উপজেলা সদরে দুই একর জমির ওপর অবস্থিত এক্সচেঞ্জটি ২০০৬ সালে কোটি টাকা ব্যয়ে ডিজিটাল হিসেবে উন্নীত করা হয়। এই এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে সংযোগের ক্ষমতা রয়েছে ৫০০টি। এক সময় উপজেলায় ৩৫০টির মতো সংযোগ চালু ছিল। কিন্তু বর্তমানে কমে গিয়ে সরকারি ও বেসরকারি কার্যালয় এবং আবাসিক এলাকা মিলিয়ে মোট সংযোগ দাঁড়িয়েছে ৪৬টি। এসব সংযোগ বছরের অধিকাংশ সময় নানা কারণে বিকল থাকে। আর বাকি সংযোগগুলো অনেক দিন ধরে নষ্ট রয়েছে।
তারাগঞ্জ থানার ওসি ফারুক আহম্মদে বলেন, ‘টেলিফোন সংযোগ নষ্ট থাকায় গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্স ও কল আসা বন্ধ আছে। সরকারি জিনিস দিনের পর দিন এভাবে বিকল হয়ে আছে। টেলিফোন অফিসের লোকদের ডাকলেও আসে না। ছয় মাসে একদিন এসে ঠিক করে দিয়ে বিল নিয়ে যায়। পরের দিন আবার টেলিফোন চলে না। নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে টেলিফোন অফিসে।’
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন জানান, তাঁর কার্যালয়ের টেলিফোনটি গত ৯ মাস ধরে কাজ করছে না। যেদিন টেলিফোন অফিসের লোকজন বিল নিতে আসেন শুধু সেই দিনই সংযোগ সচল থাকে।
ইউএনও আমিনুল জানান, তিনি তারাগঞ্জে যোগদানের পর থেকে কোনো দিন অফিসের টেলিফোন দিয়ে কাউকে কল করতে পারেননি। কখনো টেলিফোন সেটটিতে কলও আসেনি। শুধু টেবিলের শোভা বর্ধনের জন্য এটি রাখা।
রংপুর টিঅ্যান্ডটির জুনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার বিজয় সরকার বলেন, ‘সংযোগ ত্রুটির বিষয়টি জানা আছে। এটি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। আশা করছি খুব শিগগিরই সমাধান হবে যাবে।’