হোম > ছাপা সংস্করণ

আত্মহত্যা বেশি সদরে কম নান্দাইলে

ইলিয়াস আহমেদ, ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহে ২০২১ সালে ৫৫৪ জন ‘আত্মহত্যা’ করেন। ২০২০ সালের তুলনায় এ সংখ্যা কিছু কম। তবে জেলায় প্রকৃতপক্ষে আত্মহত্যার ঘটনা আরও বেশি বলে অনেকে মনে করেন। এর মধ্যে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হতাশাগ্রস্ত কম বয়সী তরুণ-তরুণীরা আত্মহত্যার পথ বেশি বেছে নিচ্ছেন। এ প্রবণতা কমাতে কাউন্সেলিং বৃদ্ধি করা প্রয়োজন বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ময়মনসিংহ জেলায় জনসংখ্যা ৫৩ লাখের বেশি। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জনবহুল এ অঞ্চল আত্মহত্যায় শীর্ষ কয়েকটি জেলার মধ্যে অন্যতম। তথ্যপ্রযুক্তির যুগে অকারণেই ছেলে-মেয়েরা আত্মহত্যার পথ বেঁচে নিচ্ছেন।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর জেলায় আত্মহত্যা করেছেন ৫২৪ জন। ২০২০ সালে এই সংখ্যা ছিল ৫৫৪। গত বছর গলায় ফাঁস দিয়ে ২৬৬ জন, বিষপানে ১২৪ এবং অন্যভাবে ১৩৪ জন আত্মহত্যা করেন। ১৩টি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যা ময়মনসিংহ সদরে। ২০২০ সালে এই উপজেলায় ১৩৮ জন আত্মহত্যা করেন। তবে ২০২১ সালে এ সংখ্যা ছিল ৯৯।

সবচেয়ে কম আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে নান্দাইলে। উপজেলায় ২০২০ সালে ১৭ এবং ২০২১ সালে ১৪ জন আত্মহত্যা করেন। এর মধ্যে বেশির ভাগ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দ বলেন, ‘বেশির ভাগ তরুণ-তরুণী বাবা-মায়ের সঙ্গে অভিমান বা চাওয়া-পাওয়ার ব্যত্যয় ঘটলে আত্মহত্যা করেন। পুলিশের তথ্যের চেয়েও বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। অনেক পরিবার লোকলজ্জা ও হয়রানির ভয়ে প্রকাশ করে না।’

জানা গেছে, মোবাইলে গেম খেলতে নিষেধ করায় গত ২৫ জানুয়ারি নগরীর শিকদারবাড়ীতে গলায় কাপড় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র শ্রাবণ সিংহ। অপর দিকে গত ১১ জানুয়ারি গৌরীপুরের সহনাটী ইউনিয়নে খাওয়ার খোঁটা দেওয়ায় অভিমান করে গলায় ফাঁস দেয় তুষার মিয়া নামে দশম শ্রেণির এক ছাত্র।

বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাছিমা আক্তার বলেন, ‘আবেগে শিশুরা বেশির ভাগ সময় আত্মহত্যা করে। আত্মহত্যারোধে প্রত্যেক বিদ্যালয়ে মনোবিজ্ঞানী নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। অনেকে মনোবিজ্ঞানে পড়াশোনা শেষ করে বসে আছেন। তাঁদের বিদ্যালয়ে নিয়োগ দিয়ে কাউন্সেলিং করা হলে আত্মহত্যারোধে কাজে আসবে।’

আত্মহত্যার কারণ হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবুল মুনসুর বলেন, ‘পারিবারিক বন্ধন আগের তুলনায় কমে যাওয়ায় আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে। মানসিক দুরবস্থা থেকে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। গোপনে অনেকে নেশা না করতে পেরে আত্মহত্যা করে। এ জন্য পরিবারের পাশাপাশি শিক্ষকেরা দায়ী। আগে পরিবার এবং শিক্ষকেরা যেভাবে ছেলে-মেয়েদের শাসন করত, এখন সেটা কমে গেছে।’

অধ্যাপক আবুল মুনসুর আরও বলেন, ‘অল্প বয়সে স্মার্টফোনে প্রেমের দিকে ঝুঁকছে তরুণ-তরুণীরা। একটা সময় সম্পর্ক ভেঙে গেলে দুর্ঘটনা ঘটায়। আত্মহত্যা রোধে পরিবার ভূমিকা রাখতে পারে। কেউ আত্মহত্যা করতে চাইলে লক্ষণ দেখে বোঝা যায়। তখন মনোবিজ্ঞানীদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে কেউ আত্মহত্যা করবে না।’

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হানুল ইসলাম বলেন, ‘এ যুগের ছেলে-মেয়েরা একটু বেশি আবেগী। তারা অভিমান করে আত্মহত্যার পথ বেঁচে নিচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি যত্রতত্র ব্যবহারও অনেকাংশে দায়ী। এ থেকে ছেলে-মেয়েদের দূরে রাখতে বেশি ভূমিকা নিতে হবে পরিবারকে। বাবা-মার উচিত সন্তানদের বেশি সময় দেওয়া। সন্তান কী করছে-না করছে, একটু খোঁজখবর রাখলে আত্মহত্যার প্রবণতা কমে আসবে।’

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ