শ্রমিকেরা তাঁদের ন্যায্য অধিকার বুঝে পাক, জুলুম-নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পাক এবং মালিকপক্ষও তাদের ন্যায্য কাজ বুঝে পাক—এভাবে পরস্পরের আন্তরিকতা ও সহযোগিতায় সবার দিন কাটুক—এ শিক্ষাই দেয় ইসলাম।
প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘শ্রমিকদের ঘাম শুকানোর আগেই তাদের মজুরি দিয়ে দাও।’ তিনি আরও বলেন, ‘শ্রমিকেরা তোমাদের ভাই। আল্লাহ তাআলা তাদের তোমাদের অধীনে করেছেন। তোমরা যা খাবে, তাদেরও তা খাওয়াবে। তোমরা যা পরবে, তাদেরও তা পরাবে। তাদের এমন কষ্টের কাজ দেবে না, যা তাদের সাধ্যের বাইরে। আর কোনো কাজ কঠিন হলে, সে কাজে তাদের সাহায্য করবে।’ সাহাবি আনাস (রা.) টানা ১০ বছর নবীজির খেদমতে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি কখনো আনাসকে বলেননি যে, এটা কেন করোনি বা এটা কেন করেছ। আনাস (রা.)ও কখনো এমন আপত্তিকর কাজ করেননি, যে জন্য কথা শুনতে হয়।
কর্মক্ষেত্রে বা ঘরে অধীনস্থ লোকজনের সঙ্গে আমরা সুন্দর আচরণ করব। আমরা যা খাই তাদের তা খাওয়াব, আমরা যা পরি তাদের তা পরাব। তাদের সাধ্যাতীত কাজের বোঝা চাপিয়ে দেব না। তাদের পাওনা যথাযথভাবে বুঝিয়ে দেব। এককথায় তাদের যাবতীয় ন্যায্য অধিকার আদায়ে সচেষ্ট হব। অনেকের ঘরে ছোট ছেলে-মেয়েরা কাজ করে। যে বয়সে তাদের হাতে বই-খাতা-কলম থাকার কথা, সে বয়সে তাদের হাতে কাজ আর কাজ। তাদেরও ইচ্ছা জাগে বিদ্যালয়ে যেতে, পড়াশোনা করতে। কিন্তু জীবিকার তাগিদে লেখাপড়ার বদলে তাদের কাজ করতে হচ্ছে। তাদের লেখাপড়ার ব্যবস্থা করা সবার দায়িত্ব।
কাজের লোকদের প্রতি সহানুভূতিশীল হলে, দুনিয়ায় মানুষের কাছেও প্রিয় হওয়া যাবে এবং আখিরাতে আল্লাহ তাআলার কাছেও পুরস্কার পাওয়া যাবে।
লেখক: মুনীরুল ইসলাম, ইসলাম বিষয়ক গবেষক