হোম > ছাপা সংস্করণ

ভয় নয় সাহস দিন

ঘর অন্ধকার করে হরর মুভি দেখছেন। দেখার সময় উত্তেজনা তুঙ্গে থাকলেও মুভি শেষ করে ওঠার পর আর ঘুমাতে পারছেন না। বাথরুমে যেতেও অস্বস্তি হচ্ছে। একা বাড়িতে থাকার সময় আড়ষ্টবোধ হচ্ছে। এমন তো হয়-ই, তাই না? কিন্তু এই ভয়ের উৎস কোথায়? একটু সহজ করে বললে, ভয় বলতে পৃথিবীতে যা কিছু আছে পুরোটাই ব্যক্তির নিজের মধ্যে। মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, মনের গণ্ডির বাইরে ভয়ের কোনো অস্তিত্ব নেই। তাহলে প্রশ্ন হতে পারে, মনের গভীরে এই ভয় জন্মায় কী করে?

চোখটা বন্ধ করে একবার মনে করার চেষ্টা করুন তো, জীবনে প্রথম কবে ভয় পেয়েছিলেন? খাওয়ার সময়? যখন কেউ বলেছিল, ‘তাড়াতাড়ি খেয়ে নাও, না হলে রাক্ষস আসবে।’ নাকি ঘরময় ছোটাছুটি করার সময়, যখন শুনেছিলেন, ‘দুষ্টুমি করলে কিন্তু মা দূরে কোথাও চলে যাবে’, ‘অন্ধকারে যেয়ো না, ভূত আছে।’

এই সব কথাই কিন্তু শৈশবের বিভিন্ন ধাপে শোনা, পরিণত বয়সে যার প্রভাব আমরা বয়ে বেড়াই। অন্ধকার, কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা প্রাণীকে ভয় পাওয়া, কারও আচরণকে ভয় পাওয়াসহ নানা ধরনের ভয় একটি শিশুর মধ্যে থাকতে পারে। যার শুরুটা হয় পরিবারের বড় কারও বয়ান থেকে। এককথায়, ভয় কখনো নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার হয়ে ওঠে। শুনতে একটু শক্ত মনে হলেও কথাটা সত্য বটে। কারণ, শিশু কথা শুনতে না চাইলে তাকে ক্ষান্ত করার সহজ এই উপায়টি প্রায় সব অভিভাবকই অবলম্বন করেন। তবে দীর্ঘমেয়াদি প্রেক্ষাপটে এর ফলাফল কোনো কোনো ক্ষেত্রে নেতিবাচক হতে পারে।

ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার বিডির চিকিৎসক ও সাইকোথেরাপি প্র‍্যাকটিশনার ডা. সানজিদা শাহ্‌রিয়া বলেন, শিশুকে ভয় দেখানো আদর্শগত দিক থেকে গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, ছোটবেলায় পাওয়া ছোট ছোট ভয় শিশুর একেক বয়সে একেক রকম মনোদৈহিক প্রভাব ফেলতে পারে।

ভয়ের মনোদৈহিক প্রভাব

  • আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি।
  • ভবিষ্যতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা।
  • ভবিষ্যতে শিশুর অস্থিরতা, বুক ধড়ফড় করা প্রভৃতি সমস্যা দেখা দেওয়া।
  • শব্দ, গন্ধ, আলোর পরিবর্তনে আতঙ্কিত হওয়া।
  • কাজে অনীহা তৈরির আশঙ্কা।
  • ভয় ছাড়া অন্য আবেগ নির্দ্বিধায় প্রকাশ করতে না পারা।

মনোদৈহিক ক্ষতি:
প্রতিনিয়ত ভয় দেখালে শিশুর শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

শারীরিক ক্ষতি:
ভয় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমায়। পাশাপাশি এটি আলসার, আইবিএস ও পরিপাকতন্ত্রের ক্ষতির জন্যও দায়ী।

মানসিক ক্ষতি:
কোনো বিষয়ের ওপর ভয় কাজ করলে পরে তা উদ্বিগ্নতায় পরিণত হতে পারে। ফলে স্ট্রেস, বিষণ্নতা, সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগার আশঙ্কা থাকে।

সানজিদা শাহ্‌রিয়া বলেন, ‘অভিভাবককে মনে রাখতে হবে, শিশুকে আমরা যে ভয়গুলো দেখাই, সেগুলো বংশপরম্পরায় প্রবাহিত হয়। মনস্তত্ত্বের ভাষায় এটাকে হট পটেটো বলা হয়। আমরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম রাগ, দুঃখ ও ভয় কপি করি।’

ভয় না দেখিয়ে যা করবেন

  • শিশুর চিন্তাশক্তিকে কাজে লাগাতে হবে।
  • বয়স অনুযায়ী যতটুকু বোঝে, তাকে ততটুকুই ইতিবাচক ভঙ্গিতে বোঝাতে হবে।
  • কোনো নির্দিষ্ট কাজ করলে তার কতটুকু ক্ষতিকর আর কতটুকু ভালো হবে, সেটা বুঝিয়ে বলতে হবে। যেমন, অন্ধকারে গেলে সে ব্যথা পেতে পারে—বিষয়টি শিশুকে বুঝিয়ে বলতে হবে। আবার প্রতিটি খাবার তার সুস্বাস্থ্য ধরে রাখতে কতটা সহায়ক, তা বলতে হবে।
  • শিশুর সামনে নিজেদের ভালো উদাহরণ তৈরি করে দেখাতে হবে।

এতে শিশুর মনে অমূলক ভয় তৈরি হবে না; বরং তার বুদ্ধি বিকাশে সহায়ক হবে অভিভাবকের ইতিবাচক আচরণগুলো।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ