স্ত্রী ও ছেলেদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা হয় কৃষক জয়নাল আবেদীনের (৫৫)। এর দেড় ঘণ্টা পর অভিমান করে ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস নেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি জেনে তাঁকে নামানোর সময় নিচে ছিটকে কাচের গ্লাসের ওপর পড়েন। এতে তার গলায় ভাঙা গ্লাস ঢুকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। গত সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার মুরাদপুর ইউনিয়নের গুলিয়াখালি এলাকার চাঁন মিয়া মোল্লার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। কৃষক জয়নাল আবেদীন একই বাড়ির ফোরক আহাম্মদের ছেলে।
জয়নাল আবেদীনের ছেলে মো. কামরুল হোসেন জানান, তাঁর বাবা ইফতার করার দেড় ঘণ্টা পর তুচ্ছ বিষয় নিয়ে তাদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এ সময় তিনি ঘরের দরজা বন্ধ করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে তিনি স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ঘরের দরজা ভেঙে বাবাকে ফাঁসের রশি খুলে নিচে নামিয়ে আনার সময় নিচে ছিটকে পড়েন। এ সময় নিচে থাকা কাচের গ্লাসের ওপর পড়লে গ্লাস গলায় ঢুকে মারাত্মক আহত হন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তাকে চমেক হাসপাতাল নিয়ে আসা হয়। কিন্তু তারপরও তার বাবাকে বাঁচাতে পারল না বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন কামরুল।
এ ব্যাপারে সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন বণিক বলেন, ‘পরিবারের সঙ্গে অভিমান করে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা চেষ্টা করেন কৃষক জয়নাল। এ সময় তার পরিবারের সদস্যরা তাকে ফাঁসির দড়ি থেকে খুলে নিচে নামিয়ে আনার সময় হঠাৎ তাদের হাত থেকে ছিটকে নিচে থাকা কাচের গ্লাসের ওপর পড়েন। এতে গ্লাস ভেঙে তার গলায় ঢুকে রক্তক্ষরণ শুরু হয় এবং পরবর্তীতে চমেক হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সুমন বণিক আরও বলেন, এ ঘটনায় সীতাকুণ্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) আশরাফুল করিম, সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) আবুল কালাম আজাদ ও তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের তথ্যানুসারে তারা জানতে পরেছেন, ফাঁসি থেকে বাঁচানোর ওপর থেকে নিচে ছিটকে পড়ে গলায় গ্লাস ঢুকে তার মৃত্যু হয়েছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।