গ্রেপ্তারআতঙ্ক ও হুমকি-ধমকিতে ঘরছাড়া চারঘাটের শলুয়া ইউনিয়ন পরিষদের দুই স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা। এ ছাড়া পোস্টার নামিয়ে ফেলা, নির্বাচনী প্রচারের গাড়িতে হামলা, প্রচারের কাজে বাধাসহ নানা অভিযোগ তুলেছেন দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মাসুম ও মাস্টার আবুল কালাম আজাদ। এ বিষয়ে তাঁরা রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এর আগে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের নির্বাচনী অফিস পোড়ানোর ঘটনায় চারঘাট মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়। নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের ছেলে ইজাজুল আজাদ বাদী হয়ে গত বুধবার মামলাটি করেন। এতে স্বতন্ত্র প্রার্থী মাস্টার আবুল কালাম আজাদের ভাই মাহবুবুর রহমান, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী আব্দুস সালাম ও আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মাসুমের নিকটাত্মীয়সহ ৭৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বাদী ইজাজুল আজাদ অভিযোগ এনেছেন, গত ১৩ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে মাহবুবুর রহমানের নির্দেশে ওই ব্যক্তিরা বালুদিয়াড় মোড়ের নৌকার অস্থায়ী নির্বাচনী ক্যাম্পে আগুন দেন। এতে বাঁশের তৈরি নৌকা, চেয়ার, টেবিলসহ যাবতীয় জিনিস পুড়ে যায়।
আগুন লাগানোর ঘটনায় নৌকা প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বী দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ওই দুই প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে ঘর ছাড়া হয়ে পড়েছেন। এ সুযোগে তাঁদের পোস্টার ও ফেস্টুন নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মাসুম বলেন, ‘ভোটের মাত্র কয়েক দিন আগে সরকার দলীয় প্রার্থী মিথ্যা অভিযোগ এনে মামলা করলেন। এতে গ্রেপ্তার আতঙ্ক বিরাজ করছে আমাদের দুই প্রার্থীর কর্মীদের মধ্যে। প্রচার কাজে বাধা দিয়ে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। সব পোস্টার ফেস্টুন নামিয়ে ফেলা হয়েছে। এতে সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এখানে নির্বাচনের সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিকে হয়ে গেছে। আমি অবিলম্বে এই অপতৎপরতা বন্ধের জোর দাবি জানাচ্ছি।’
অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী মাস্টার আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে নিজেদের অফিস পুড়িয়ে আমার কর্মী-সমর্থকদের নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তার ও হামলার আতঙ্কে প্রচার চালাতে পারছি না। প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানিয়েও কোনো প্রতিকার নেই। এ অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছি।’এ বিষয়ে চারঘাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নৌকার প্রার্থীর অফিস পোড়ানোর ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রবিউল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রার্থীদের অভিযোগ পেয়েছি। নির্বাচনী প্রচারণার সময় কোথাও কোনো আচরণবিধি লঙ্ঘন বা অঘটনা ঘটছে কী-না তা নজরদারি করা হচ্ছে। একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। ২৬ শে ডিসেম্বর শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শতভাগ সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য প্রশাসন কাজ করছে।’