হোম > ছাপা সংস্করণ

ভাঙছে তীর, নষ্ট হচ্ছে রাস্তা

কুড়িগ্রামের উলিপুর, ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী ও লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন নদ-নদীতে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে। এতে নদী রক্ষা বাঁধসহ তীরের আবাদি জমি ও বসতবাড়ি ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে। ট্রলি-ট্রাক্টরে বালু পরিবহন করায় নষ্ট হচ্ছে রাস্তা। এভাবে বালু তুলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে কয়েকটি চক্র।

উলিপুর: উলিপুর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৮টি নদীভাঙনকবলিত। এগুলোর মধ্যে হাতিয়া ইউনিয়নে প্রতিবছর ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনের শিকার হয়ে হাজার হাজার মানুষ বাস্তুহারা হন। এই ইউনিয়নের মাঝিপাড়া, অনন্তপুর ঘাট, কুমারপাড়ায় অবৈধভাবে বালু তুলে বিক্রি করছে চক্রটি।

স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, ব্রহ্মপুত্রের বুকে জেগে ওঠা চর ও তীরের মাটি বিক্রি করছে কয়েকটি চক্র। প্রতিদিন শতাধিক মাটি ও বালুবাহী ট্রাক্টরের যাতায়াতে এলাকার পাকা-কাঁচা রাস্তা নষ্ট হয়ে গেছে। আর এই বালু তোলার সঙ্গে জড়িত স্থানীয় প্রভাবশালী সোহেল, মিলনসহ প্রমুখ ব্যক্তির চক্র। চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে নদের বালু ও মাটি অবাধে বিক্রি করে এলেও কার্যত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ট্রাক্টরচালক বলেন, ‘হাতিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে আমাদের এক গাড়ি বালু আনতে হয় ৬০০ টাকা দিয়ে। আর ছোট ট্রলিতে ৪০০ টাকা দিতে হয়।’

এ বিষয়ে বালু উত্তোলনকারীদের মধ্যে অন্যতম শরিফুল ইসলাম সোহেল ও মিলন মিয়া বলেন, ‘সবকিছু হাত করে বালু তোলা হচ্ছে। যেহেতু এসে দেখে গেলেন, পারলে বন্ধ করে দেন।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল কুমার বলেন, ‘বিষয়টি জানা ছিল না। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পাটগ্রাম: লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় ধরলা নদী থেকে বালু তুলে ট্রলি, ট্রাক্টর দিয়ে পরিবহন করায় রাস্তাঘাট খানাখন্দে ভরা। চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বালু ব্যবসায়ীরা কারও কোনো কথা না মানায় অসহায় হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী।

পাটগ্রাম পৌরসভাসহ প্রায় সব ইউনিয়নে চলছে অবৈধ বালুর ব্যবসা। উপজেলার ধরলা, সানিয়াজান, তিস্তা, চেনাকাটা, শংলী, টেংনামারী নদী থেকে বালু উত্তোলন করে ট্রলি ও ট্রাক্টরের মাধ্যমে আঞ্চলিক সড়ক ও মহাসড়কের দুই পাশে বড় বড় স্তূপ করে রাখা হয়েছে।

পৌর শহরের মধ্য দিয়ে ও মহাসড়ক হয়ে বেপরোয়াভাবে বালু পরিবহনের ট্রলি ও ট্রাক্টর চলাচল করায় প্রায় দুর্ঘটনা ঘটছে। ২০২১-২২ সালে বালুবাহী ট্রাক-ট্রাক্টরের কারণে শিশুসহ অনন্ত পাঁচজন নিহত হয়েছে।

বুড়িমারী ইউনিয়নের উফারমারা গ্রামের বানিয়াডাঙ্গী এলাকার গৃহিণী মজিদা খাতুন বলেন, ‘রাস্তার কাছে বাড়ি হওয়ায় ছোট ছোট বাচ্চা নিয়ে সব সময় আতঙ্কে থাকি।’

পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুর রহমান বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময়ে বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে জরিমানা করছি।’

বালিয়াডাঙ্গী: ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আমজানখোর ইউনিয়নে নাগর নদ থেকে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে।

গত শনিবার আমজানখোর ইউনিয়নে গিয়ে দেখা গেছে, বিজিবির কোটপাড়া বিওপি ক্যাম্পের উত্তর পাশে বাঁশঝাড়ের ভেতরে বালুর বিশাল স্তূপ করা হয়েছে। সেখান থেকে ট্রাক্টরের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে বালু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, হোসেন আলীসহ ওই এলাকার ৬-৭ জনের একটি চক্র ভোরবেলা ট্রাক্টর দিয়ে নাগর নদ থেকে বালু তুলে স্তূপ করে। পরে সেটা বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হয়। এলাকার লোকজন বাধা দিলে উল্টো নানা ভয়ভীতি দেখানো হয়।

কোটপাড়া গ্রামের বাসিন্দা জয়নাল ও তাঁর প্রতিবেশীরা জানান, সূর্য ওঠার আগেই নাগর নদ থেকে বালু তোলেন ব্যবসায়ীরা।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সব বিজিবির ক্যাম্প প্রধান মনির ও কোটপাড়া বিওপির ক্যাম্প কমান্ডার সান জাহান বলেন, এক সপ্তাহ পুরো দল বদলি হয়ে এই ক্যাম্পে এসেছে। এর আগের যারা দায়িত্বে ছিল, তাদের সময় এসব বালু উত্তোলন হতে পারে। এখন সব ধরনের বালু তোলা বন্ধ রয়েছে। ভবিষ্যতেও কেউ এসব বালু উত্তোলন করতে পারবে না।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যোবায়ের হোসেন বলেন, ‘নাগর নদ থেকে অবৈধভাবে বালু তোলার বিষয়টি আমার জানা নেই। ঘটনার সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন উলিপুর (কুড়িগ্রাম), বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) ও পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ