হোম > ছাপা সংস্করণ

‘তাঁর মতো ডাক্তার কমই হয়’

সাবিত আল হাসান, নারায়ণগঞ্জ

‘ছয় বছর ধরে মা হওয়ার চেষ্টা করছিলাম। অনেক জায়গায় গিয়ে টাকা খরচ করে চিকিৎসা করিয়েছি, কিন্তু কোথাও আমার মনঃপূত চিকিৎসা হচ্ছিল না। পরে শুনলাম আমার বাড়ির পাশেই একজন ভালো চিকিৎসক আপা আছেন। উনি এত অল্প টাকায় চিকিৎসা করেছেন, যা এই সময়ে অকল্পনীয়। মাত্র ৪ মাসেই আমি গর্ভ ধারণ করতে সক্ষম হলাম। আজ সেই বাবুর বয়স প্রায় ২ বছর হতে চলেছে। তাঁর মতো ডাক্তার খুব কমই হয়।’

কথাগুলো বলছিলেন সিদ্ধিরগঞ্জের চৌধুরী বাড়ি এলাকার বাসিন্দা পিংকি বর্মণ (২৪)। দীর্ঘ ৬ বছর মা হতে না পারার কষ্ট থেকে মুক্তি পেয়েছেন ডা. নাফিয়া ইসলামের সহায়তায়। আর তাই, চিকিৎসকের কথা জিজ্ঞেস করতেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন পিংকি।

শুধু পিংকি একা নন। একে একে প্রায় ২০ জন বন্ধ্যত্বের যন্ত্রণা ভোগ করা দম্পতির মুখে হাসি ফুটিয়েছেন নাফিয়া ইসলাম। মাত্র ৩ বছরে এই চিকিৎসক পেয়েছেন জনপ্রিয়তা। প্রতিনিয়ত বন্ধ্যত্বের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে নারী-পুরুষ আসছেন তাঁর কাছে।

নাফিয়া ইসলাম নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র ২-এর মেডিকেল অফিসার। এখানে মাত্র ৫০ টাকা ফি’তে রোগীরা সেবা পান। বন্ধ্যত্ব এবং ডায়াবেটিকসের চিকিৎসাসেবা দিয়ে কম সময়েই রোগীদের কাছে প্রিয় ডাক্তার আপা হয়ে উঠেছেন তিনি। শুরুর দিকে বন্ধ্যত্বের চিকিৎসা পেয়ে সফল হওয়া দম্পতিদের তালিকা না রাখলেও বিষয়টি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর নজরে এলে তিনি সব রোগীদের তালিকা রাখার পরামর্শ দেন। এর পর থেকেই ডা. নাফিয়া তাঁর কাছে সেবা নিয়ে সফল হওয়া রোগীদের নাম-ঠিকানা সংরক্ষণ করে রাখছেন।

প্রায় তিন বছর ধরে বন্ধ্যত্বের অভিশাপ ছিল ফতুল্লার শিবু মার্কেট এলাকার বাসিন্দা দোলার (২১)। কোনো এক নারীর মুখে খবর পেয়ে ফতুল্লা থেকেই ছুটে গেছেন সিদ্ধিরগঞ্জে। ডাক্তার আপার কাছে বলতেই তিনি আশ্বস্ত করলেন, ভয়ের কোনো কারণ নেই। মাত্র তিন মাসের চিকিৎসায় সাফল্য পান।

ডাক্তার নাফিয়ার সম্পর্কে দোলা বলেন, ‘ডাক্তার আপা অনেক ভালো। তাঁর মতো এত বিনয়ী চিকিৎসক আমি আগে দেখিনি। আমাকে অনেকেই বলেছিল, সরকারি হাসপাতালে সেবা না নিতে। এই হাসপাতাল অন্য সবকিছুর থেকে আলাদা। আমি ৫০ টাকার ভিজিট ছাড়া ওই হাসপাতালে আর কোনো খরচ করিনি। তিনি যে ওষুধ লিখে দিয়েছেন, তাই সেবন করেছি।’

এমন সেবার বিষয়ে নাফিয়া ইসলাম বলেন, ‘আমি ২০১৯ সালের আগস্ট থেকে নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগদান করি। এর পর থেকেই আমি আমার সর্বোচ্চ সেবা দিতে চেষ্টা করেছি। আল্লাহর রহমতে ২০ জনের বেশি বন্ধ্যত্বের শিকার হওয়া দম্পতির মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছি। এখন প্রতি মাসে ৮-৯ জনের বেশি রোগী বন্ধ্যত্বের সেবা নিতে আসেন। এখানে সাধারণ বেসরকারি হাসপাতালের চেয়ে অর্ধেকেরও কম মূল্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সুযোগ থাকায় রোগীদের সাশ্রয় হচ্ছে।

এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জের সামাজিক সংগঠন স্লোগানের সাধারণ সম্পাদক সোহেল খান সিদ্দিক বলেন, ‘ডা. নাফিয়ার চিকিৎসাসেবার কথা আমরা প্রায়ই আশপাশের মানুষের কাছে শুনতে পাই। সিদ্ধিরগঞ্জ জনবহুল এলাকা হওয়ায় চিকিৎসাসেবার প্রয়োজন হয় অনেক। কিন্তু এখানে শ্রমিকদের বসবাস বেশি। তাঁদের অল্প খরচে সর্বোচ্চ চিকিৎসা এবং যেই আন্তরিকতার সঙ্গে রোগীদের সেবা দেওয়া হয়, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। আমরা চাই, তাঁর সেবাকে আদর্শ হিসেবে ধরে বাকি চিকিৎসকেরাও অনুসরণ করুক।’

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ