পীরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ডোবা ও খাল বিলে ফাঁদ পেতে দীর্ঘদিন ধরে বকসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি শিকার করে আসছে একটি অসাধু চক্র। ফাঁদে প্রতিদিন ধরা পড়ছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির বক ও অন্যান্য পাখি।
জানা গেছে, উপজেলার চৈত্রকোল, ভেন্ডবাড়ি, চতরা, পাঁচগাছি, শানেরহাট, টুকুরিয়া, কাবিলপুর, চতরা, চৈত্রকোল, বড়দরগাহ, কুমেদপুর, বড় আলমপুর, রায়পুর এবং মিঠিপুর ইউনিয়নে অনেকগুলো ডোবা ও বিল রয়েছে। এ সব বিলে অতিথি পাখিসহ সব প্রজাতির পাখির আগমন ঘটে শীত মৌসুমে। সারা বছরই দেখা যায় বক।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, বক ধরতে কলা ও বেতের পাতা দিয়ে ফাঁদ তৈরি করা হয়েছে। বাঁশের চিকন শলার মাধ্যমে একজন মানুষের উচ্চতার সমান উঁচু করে কূপের মতো আকৃতি করে এ ফাঁদ তৈরি করা হয়। এটি খাল বিলের পানির কাছে স্থাপন করা হয়। এই ফাঁদের মধ্যে একজন শিকারি চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকেন। ওপরে পোষা একটি বকের পায়ে সুতা বেঁধে রাখা হয়। ক্ষুধার্ত বক মাছ শিকারের জন্য পানিতে বসে থাকে। শিকারি তার ফাঁদের বক টিকে টোকা দিলে সেটি উড়ে যাওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা ও চেঁচামেচি করে। আশপাশের বক বিপদে পড়া পাখিটিকে উদ্ধারের জন্য তাঁর কাছে গিয়ে বসে। এ সময় ফাঁদের ভেতর থাকা শিকারি পাখিটিকে কৌশলে হাত দিয়ে আটকায়। ফাঁদে ধরা পড়া এক জোড়া সাদা বক ৩০০ টাকা দরে বিক্রি করেন শিকারিরা।
এলাকাবাসী জানান, উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের ডোবা ও বিল থেকে বকসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি শিকার করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। শীতের মৌসুমে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির পাখিদের বিচরণ বেড়ে যায় বিল এলাকায়। বিল ও নদনদীগুলোতে বক, জল হাঁস, জল পিঁপি, ডাহুক ও মাছরাঙাসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখির আগমন ঘটে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অবৈধ ফাঁদ ব্যবহার করে নির্বিচারে পাখি শিকার করছেন এক শ্রেণির অসাধু চক্র।
উপজেলা বন কর্মকর্তা শাহজাহান মিয়া বলেন, পাখির আবাসস্থল ও বিচরণ ক্ষেত্র সংকুচিত হয়ে আসছে। কীটনাশকের ব্যবহার এবং অবাধে পাখি শিকারের কারণে দিন দিন পাখির সংখ্যা ও প্রজাতি কমে যাচ্ছে। পাখি রক্ষায় আইন প্রয়োগের পাশাপাশি জনসাধারণকেও সচেতন হতে হবে।