ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল-অরুয়াইল সড়কটির দীর্ঘ ১৪ কিলোমিটার। ৩০ গ্রামের মানুষের জেলা সদরে যাওয়ার একমাত্র সড়ক এটি। সড়কটির চুন্টা ঘাগড়াজুর থেকে ভুইশ্বর পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার অংশ বেহাল। সংস্কারের অভাবে এটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বর্ষার আগে সংস্কার না হলে ভাঙা অংশটি হাওরে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা এলাকাবাসীর।
গত বর্ষার ঢেউয়ের আঘাতে ঘাগড়াজুর থেকে ভুইশ্বর বাজার পর্যন্ত সড়কের অর্ধেক ভেঙে হাওরের ফসলি জমিতে বিলীন হয়ে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সংস্কার করা না হলে আসন্ন বর্ষায় সড়কের বাকি অংশও বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় সচেতনমহল। তাঁরা জানান, সড়কটি সরাইল ও নাসিরনগর উপজেলার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ৩০ গ্রামের মানুষের জেলা শহরে যাওয়ার একমাত্র সড়ক এটি। সড়কটি বর্ষার আগে সংস্কার না হলে ওই এলাকার দুই লাখ মানুষ চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়বে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, সরাইলের উত্তরে হাওর বেষ্টিত এলাকায় ১১ বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছিল সরাইল থেকে অরুয়াইল পর্যন্ত সড়কটি। এর ফলে উপজেলার চুন্টা, পাকশিমুল ও অরুয়াইল ইউনিয়ন এবং নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ও কুন্ডা ইউনিয়নের ২ লক্ষাধিক মানুষের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আসে। কিন্তু সড়কটি নির্মাণের পর থেকে প্রয়োজনীয় তদারকি ও সংস্কারের অভাবে বেহাল হয়ে যায়।
সরেজমিন দেখা যায়, সড়কটির দুপাশ ভেঙে রাস্তাটি সরু হয়ে গেছে। সড়কের মাঝে ছোট-বড় হাজারো গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। গর্তে যানবাহনের চাকা আটকে অহরহ দুর্ঘটনা ঘটছে। হেলেদুলে গাড়ি চলে। সড়কটির বিভিন্ন অংশের আস্তরণ উঠে মাটি বের হয়ে যাওয়ায় গাড়ি চলাচলের সময় ধুলোর কুণ্ডলী ওঠে। ধুলো পড়ে যাত্রীদের শরীর ধুলো জমে মূর্তির রূপ ধারণ করে। ফলে প্রায়ই যাত্রীসহ গাড়ি উল্টে দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়ছে। এক ঘণ্টার জায়গায় ২ ঘণ্টা সময় লাগছে। এতে যেমন সময় নষ্ট হচ্ছে তেমনি যাত্রী-পথচারীদের গুনতে হচ্ছে দ্বিগুণ ভাড়া। অন্যদিকে বর্ষায় কাঁদায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে সড়কটির এই অংশ।
সরাইল যাওয়ার পথে সালাম নামের এক সিএনজি যাত্রী আক্ষেপ করে বলেন, আকাশের যে অবস্থা মনে হয় আজকে বৃষ্টি হলে বিকেল থেকে গাড়ি চলাচল একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ বৃষ্টি হলে এ রাস্তায় হাঁটু পরিমাণ কাদা থাকে।
অরুয়াইল বাজারের পল্লী চিকিৎসক রাকেশ দাস বলেন, ‘সিলেট যাওয়ার কথা ভাবছি। তবে কেমনে যাব সেই চিন্তা করছি। সিএনজিতে উঠলে ভয় হয়। ঝাঁকুনির কারণে সমস্ত শরীরে ব্যথা করে।’
অরুয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া বলেন, সড়কটিতে ছোট-বড় গর্ত থাকায় প্রায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে এলাকাবাসী। সন্ধ্যার পর ওই সড়কে যাতায়াত করা একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়ে।
এই বিষয়ে উপজেলা এলজিইডির সহকারী প্রকৌশলী মাসুদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।