ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার সিদ্ধি গ্রামের আখচাষি মো. নজরুল ইসলাম। নিজের জমি না থাকায় অন্যের জমি বর্গা নিয়ে আখের আবাদ করেন। কিন্তু বছরের নির্দিষ্ট সময়ে তিনি দেশ ভ্রমণে বের হন। সেটি শুধু জাতীয় পতাকা বিক্রির জন্য। ২১ ফেব্রুয়ারি ও ১৬ ডিসেম্বর ঘিরে তিনি এ কাজ করেন। একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এবং মহান বিজয় দিবস তাঁর কাছে অনেক তাৎপর্যপূর্ণ। তাই এই দুই দিবসের ছয় দিন আগেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। ছুটে যান দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। পতাকা বিক্রি করেন। এতেই তাঁর আনন্দ।
কিশোরগঞ্জ সদরের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম চত্বরে গতকাল শুক্রবার পতাকা বিক্রি করছিলেন নজরুল ইসলাম (৫০)। তাঁকে ঘিরে বেশ কিছু মানুষের জটলা। পতাকা কিনতে বেশ কয়েকজন দরদাম করছেন। জানতে চাইলে নজরুল বলেন, ‘শুধু ভালো লাগা থেকেই এই কাজ করি। এই বিশেষ দিনগুলো আমাদের ইতিহাসের অংশ। বাংলা ভাষার প্রতিষ্ঠা ও স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্যই তো মহান মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। তাই একুশে ফেব্রুয়ারি ও ১৬ ডিসেম্বরের ছয় দিন আগেই পছন্দের কোনো জেলায় পতাকা বিক্রি করতে আসি।’
নজরুল আরও বলেন, ‘এবার দেশের সঙ্গে আমার বয়সও ৫০ পূর্ণ হয়েছে। আগামী কয়েকটা দিন কিশোরগঞ্জে ঘুরব, মানুষ দেখব আর পতাকা বিক্রি করব। যা আয় হবে, তা দিয়ে ছয় দিনের তিন বেলা খাবারের ব্যবস্থা হয়ে যাবে। আর এই খোলা মঞ্চে রাত কাটিয়ে দেব। এতেই আমার শান্তি।’