ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় বোরো ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। দম ফেলার ফুরসত মিলছে না তাঁদের। ধান কাটতে কেউ কেউ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিক এনেছেন। অনেকেই স্থানীয় শ্রমিকদের দিয়ে ধান কেটে ঘরে তুলছেন। তবে বাম্পার ফলন পেলেও দামে হাসি নেই চাষিদের মুখে। তাঁরা বলছেন, বর্তমানে যে বাজার দর তাতে লোকসানে পড়তে হবে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, চারদিকে চলছে ধান কাটা-মাড়াইয়ের মহোৎসব। কেউ জমিতে ধান কাটছেন, কেউ মেশিনে মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত। কোথাও কোথাও কৃষাণীরা সংঘবদ্ধ হয়ে ধান সেদ্ধ করছেন। বাড়ির উঠানে বা আঙিনায় কেউ ধান শুকানোর কাজ করছেন।
উপজেলার দুলালপুর গ্রামের কৃষক শানু মিয়া জানান, সব জিনিসের দাম বেশি শুধু ধানের দাম কম। এই দাম থাকলে ভবিষ্যতে ধান চাষ করবেন কি না সে বিষয়ে ভাববেন বলে জানান তিনি।
কৃষক আবদুর রহিম অপু জানান, ধানের দাম না বাড়ালে লোকসানের মুখে পড়বেন চাষিরা।
কৃষক ইসমাইল, কলিম উদ্দিন, দুলাল মিয়া, জদু মিয়া, শাহাবুদ্দিনসহ আরও অনেকেই জানান, ধানের ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ না করলে ক্ষতির মুখে পড়বেন চাষিরা। উৎপাদন খরচও তোলা সম্ভব হবে না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মাহবুবুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যেসব জমির ধান পেকে গেছে সেগুলো দ্রুত কেটে ফেলাই উত্তম। এতে ফলনের পরিমাণ ঠিক থাকবে।’
ধানের বাজার দরের বিষয়ে মাহবুবুল হাসান বলেন, ধান মাড়াইয়ের পর শুকিয়ে সংরক্ষণ করা যেতে পারে। পরে দাম বাড়লে বিক্রি করলে লাভবান হবেন চাষিরা। বর্তমান বাজারে এক মণ ধান বিক্রি করে একজন শ্রমিকের পারিশ্রমিকের টাকা পাওয়া যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা না গেলে ভবিষ্যতে কৃষকেরা ধান চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন। অন্য ফসলের দিকে ঝুঁকবেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় ৮ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। স্থানীয় জাতের পাশাপাশি ব্রি-২৮,৫৮, ৭৪,৮১, ৮৮,৮৯, ৯২ ও ৯৬ জাতের ধান চাষ হয়েছে।