এলিয়া সুলেমানের ‘ডিভাইন ইন্টারভেনশন’, অ্যানেমারি জাসিরের ‘সল্ট অব দ্য সি’, মাই মাসরির ‘৩০০০ নাইটস’সহ ফিলিস্তিনের অনেক আলোচিত সিনেমা দেখা যেত নেটফ্লিক্সে। সপ্তাহখানেক ধরে সিনেমাগুলো আর দেখা যাচ্ছে না এ প্ল্যাটফর্মে। শুধু এ তিন সিনেমা নয়, ‘প্যালেস্টাইন স্টোরিজ’ নামের লাইব্রেরি থেকে ১৯টি সিনেমা সরিয়ে দিয়েছে নেটফ্লিক্স। এ নিয়ে চলছে বিতর্ক।
নেটফ্লিক্সের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে সান ফ্রান্সিসকোভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ফ্রিডম ফরোয়ার্ড। সংগঠনটি একটি খোলাচিঠিতে নেটফ্লিক্সের কাছে জানতে চেয়েছে, কেন এই ১৯টি সিনেমা সরিয়ে দেওয়া হলো? ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘ফিলিস্তিনি নির্মাতাদের নির্মিত এবং ফিলিস্তিনের জনগোষ্ঠীর কথা উঠে এসেছে—এমন সিনেমাগুলো সরিয়ে দেওয়ার ব্যাখ্যা জানতে চাই আমরা। এমন একটা সময়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো, যখন ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী ফিলিস্তিনে গণহত্যা চালাচ্ছে। নেটফ্লিক্সের এ সিদ্ধান্ত ফিলিস্তিনিদের কণ্ঠস্বরকে আরও রুদ্ধ করবে।’
বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক উঠতেই জবাব দিয়েছে নেটফ্লিক্স। তারা জানিয়েছে, ২০২১ সালে তিন বছরের চুক্তিতে প্যালেস্টাইন স্টোরিজের আওতায় সিনেমাগুলো প্রচার করা হয়। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় সিনেমাগুলো সরানো হয়েছে। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনো যোগ নেই।
নেটফ্লিক্সের এ ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন ফ্রিডম ফরোয়ার্ডের নির্বাহী পরিচালক সঞ্জীব বেরি। এই পররাষ্ট্রনীতি বিশ্লেষক ও আইনজীবী হলিউড রিপোর্টারকে বলেন, ‘নেটফ্লিক্স কেন এ সিনেমাগুলোর চুক্তি নবায়ন করেনি, সেটা জানতে চাই আমরা। নেটফ্লিক্স ৩০০ বিলিয়ন ডলারের একটি কোম্পানি, তারা চাইলেই লাইসেন্স নবায়ন করতে পারত। কিন্তু করেনি। ফিলিস্তিনের জনগণ এখন অপরিসীম দুর্ভোগের মধ্যে আছে। নেটফ্লিক্সের উচিত ছিল ফিলিস্তিনিদের গল্পগুলো বিশ্বের সামনে তুলে ধরার দিকে গুরুত্ব দেওয়া। এর বদলে তারা ফিলিস্তিনি চলচ্চিত্রের প্রায় সম্পূর্ণ লাইব্রেরি মুছে দিল।’
ডেডলাইনকে সঞ্জীব বেরি আরও বলেন, ‘আমরা সন্দেহ করছি, লাইসেন্স শেষ হওয়ার এই যুক্তি অজুহাতমাত্র। ফিলিস্তিনিদের এই দুর্দশার সময়ে উচিত ছিল তাদের কথাগুলো সবাইকে জানানো। কিন্তু তার বদলে সিনেমাগুলো সরিয়ে দিয়ে ফিলিস্তিনিদের থেকে মানুষের দৃষ্টি ফেরানোর খেলা শুরু করেছে নেটফ্লিক্স।’
মুছে দেওয়া সিনেমাগুলোর লাইসেন্স নবায়ন করে আবার সেগুলো দর্শকদের সামনে আনা হবে কি না, এমন প্রশ্ন করা হয়েছিল ডেডলাইনের পক্ষ থেকে। তবে নেটফ্লিক্স কর্তৃপক্ষ সে প্রশ্নের উত্তর দেয়নি।