হোম > ছাপা সংস্করণ

বেসরকারিতে বিদেশি ঋণ বাড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা দেশে প্রচলিত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চড়া সুদের বিকল্প উৎস হিসেবে কম সুদের বিদেশি ঋণে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। বিশেষ করে করোনাকালে বিদেশ থেকে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। অনেক ব্যবসায়ী ও শিল্পপ্রতিষ্ঠান বিদেশ থেকে ঋণ নিয়ে তা ব্যবসায় বিনিয়োগ করছেন। তা ছাড়া, বিদেশি ঋণ নিতে বাংলাদেশ ব্যাংকও নীতিগত সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে উদ্যোক্তাদের।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, সাধারণত দেশের তৈরি পোশাক, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, খাদ্য উৎপাদন, টেক্সটাইল, ওষুধ, সিরামিক, যন্ত্রপাতি, গাড়ি, সিমেন্ট, রাবার, প্লাস্টিক, তামাক, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রভৃতি খাতে ঋণ দিচ্ছে কয়েকটি দেশ ও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান। তৈরি পোশাকসহ রপ্তানি খাতের উদ্যোক্তারা বিভিন্ন কাঁচামাল ও মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি করতে এক বছরের কম সময়ের জন্য স্বল্পমেয়াদি ঋণ নিচ্ছেন। এ জন্য কোনো কর্তৃপক্ষের অনুমতিও লাগে না। এ ছাড়া বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষও (বিডা) বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণ বিতরণে সহায়তা করে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিদেশ থেকে ঋণ গ্রহণের অন্য কারণ দেশীয় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তুলনায় বিদেশি ঋণে সুদের হার বেশ কম। এ ধরনের ঋণে তেমন কোনো খারাপ দিক নেই। তবে বিদেশ থেকে ঋণ নিয়ে তা ব্যবসায়ীরা কোন কোন খাতে ব্যবহার করছেন, তা বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরদারি করা উচিত।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য থেকে জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩০৮ কোটি ডলার, যা দেশীয় মুদ্রা টাকার হিসাবে প্রায় ১ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা। এটি ২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে ছিল ১ হাজার ৪৭৬ কোটি ডলার বা ১ লাখ ২৭ হাজার কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে বিদেশি ঋণ বেড়েছে ৫৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ।

তথ্য বলছে, গত ডিসেম্বর শেষে অফশোর ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বিদেশ থেকে প্রাপ্ত ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮১ হাজার ১৪৭ কোটি টাকায়, যা পাঁচ বছর আগে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর শেষে ছিল ৩৯ হাজার কোটি টাকা। পাঁচ বছরের ব্যবধানে বিদেশি ঋণ বেড়েছে ৪২ হাজার কোটি টাকা বা ১০৮ শতাংশ। আর বিদেশি ঋণের ৬৭ শতাংশই স্বল্পমেয়াদি।

এ বিষয়ে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, দেশীয় ব্যাংকের তুলনায় কম সুদের কারণে অনেকে এখন বিদেশি ঋণে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। ব্যাংকগুলোর অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটের ঋণও বাড়ছে। উদ্যোক্তাদের জন্য এটা একটা ভালো বিকল্প। তবে অনেক বেশি বিদেশি ঋণ নিতে গেলে পরিশোধের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি হতে পারে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশের ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা এখন বিদেশ থেকে সব ধরনের খরচসহ ২ থেকে ৪ শতাংশ সুদে ঋণ পাচ্ছেন। আর দেশের বাজারে সুদহার কমার পরও গত ফেব্রুয়ারিতে গড় সুদহার ছিল ৭ দশমিক ১০ শতাংশ। দুই বছর আগে যা ছিল ৯ দশমিক ৬২ শতাংশ। আর দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সুদহার যথাক্রমে ৯ শতাংশ ও ১১ শতাংশ।

এদিকে লন্ডন ইন্টারব্যাংক অফার্ড রেট (লাইবর) পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এক দশক আগে লাইবর রেট ছিল ৬ শতাংশের বেশি। এক বছর আগে লাইবরের সুদহার গড়ে দশমিক ২ শতাংশে নেমে আসে। চলতি সপ্তাহে এক বছর মেয়াদি লাইবর সুদহার ছিল ২ দশমিক ৩১ শতাংশ। ছয় মাস মেয়াদি লাইবর ১ দশমিক ৫৬ শতাংশ এবং এক মাসের কম মেয়াদ লাইবর দশমিক ৫৫ শতাংশে নির্ধারিত হয়েছে। লাইবরের নিম্ন সুদহারকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশি বড় শিল্পোদ্যোক্তারা কমিশন, ফিসহ সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ সুদে বিদেশি প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিচ্ছেন।

এ বিষয়ে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সহসভাপতি মনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাংলাদেশে ব্যাংকের ঋণের যে সুদহার, তা বেশ চড়া। এটি বিনিয়োগের জন্য খুব একটা সহায়ক নয়। তাই যাঁদের দক্ষতা ও যোগ্যতা রয়েছে, বিদেশ থেকে কম সুদে ঋণ নিচ্ছেন। বিশেষ করে রপ্তানি বাণিজ্যের জন্য এ সুযোগ খুবই আকর্ষণীয়।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ