দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় রাজশাহীর পুঠিয়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাকিল উদ্দিন আহমেদকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার সকালে রাজশাহী বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোসা. ইসমত আরা এ আদেশ দেন।
এর আগে গত বুধবার সকালে সাকিল উদ্দিন আহমেদ এই আদালতে আত্মসমর্পণ করে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন আবেদন করেন। সেদিন আদালতে মামলার মূল নথি না-থাকায় জামিন আবেদনের শুনানি হয়নি। আদালত তাঁকে আবার গতকাল রোববার আদালতে হাজির হতে বলেন।
সাকিল উদ্দিন আহমেদের আইনজীবী আসলাম সরকার জানান, গতকাল রোববার নির্ধারিত দিনে সাকিল উদ্দিন আহমেদ আদালতে হাজির হন। শুনানিতে বিচারক তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এরপর তাঁকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
সাকিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, পুঠিয়া থানার ওসির দায়িত্বে থাকাকালে পুলিশ রেগুলেশন অব বেঙ্গলের প্রবিধান ২৪৩ ও ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫৪ ধারা সুস্পষ্টভাবে লঙ্ঘন এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অপরাধমূলক অসদাচরণ করে ২০১৯ সালের ১১ জুনের একটি মামলায় আটজন আসামির নাম উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও কারসাজি করে ওই এজাহার পরিবর্তন করেন।
এ ছাড়া ওই মামলার জন্য সাদা কাগজে বাদীর সই নিয়ে সেটি দিয়েই মনগড়া এজাহার তৈরির অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এ মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে আসামির নাম, বাসস্থান ও ঠিকানাসংবলিত কলামে ‘অজ্ঞাতনামা’ লিপিবদ্ধ করা হয়। যদিও বাদী আসামিদের নাম-ঠিকানা দিয়েছিলেন। আর হত্যার ঘটনা ভিন্ন খাতে নিতে এক কিশোরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে বাধ্য করারও অভিযোগ আছে।
বিচার বিভাগীয় তদন্তে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ওসি সাকিলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আল-আমিন গত ২৪ জানুয়ারি তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। সেই মামলায় জামিন নিতে হাইকোর্টে যান সাকিল। তবে গত ২৩ নভেম্বর উচ্চ আদালতের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের বেঞ্চ সাকিলকে দুই সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতেই আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।