রাজবাড়ী পৌরসভা এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। দীর্ঘদিন সরবরাহ লাইন পরিষ্কার না করায় পানিতে ময়লা জমছে। ফলে খাওয়ার অনুপযুক্ত হয়ে পড়ছে পৌরসভার সরবরাহ করা পানি। পৌরবাসী বাধ্য হয়ে নিজেরাই মোটর বসিয়ে পানি সংগ্রহ করছেন।
পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ৬৫ কিলোমিটারের পাইপ লাইনে প্রতিদিন ২ হাজার গ্রাহকের জন্য ৬ লাখ গ্যালন পানি বিশুদ্ধ করা হয়। রিডিং মিটার না থাকায় অপচয় হচ্ছে অতিরিক্ত পানি।
এদিকে, পানি সরবরাহ, পয়োনিষ্কাশন এবং রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলীর পদটিও শূন্য রয়েছে। ফলে বিদ্যুৎ বিভাগের প্রকৌশলী আতিকুর রহমান জুয়েলকে অস্থায়ীভাবে পানি সরবরাহ এবং পয়োনিষ্কাশন ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সজ্জনকান্দা এলাকার বাসিন্দা সালেহীন পাপুন বলেন, ‘এক সময় সারা দেশে রাজবাড়ীর পানিকে মডেল হিসেবে গণ্য করা হতো। এত বিশুদ্ধ সুপেয় পানি সারা দেশের কোথাও পাওয়া যেত না। এখন এই দুর্গন্ধযুক্ত পানি দিয়ে থালা-বাটিও পরিষ্কার করা যায় না।’
হাসপাতাল রোডের বাসিন্দা নাসরিন আক্তার বলেন, ‘পৌরসভার সরবরাহ করা পানিতে অতিরিক্ত ময়লা। ওই পানি খাওয়া যায় না। শুধুমাত্র থালা-বাসন পরিষ্কারের কাজে ব্যবহার করা হয়। অথচ মাস গেলে ঠিকই পানির বিল দিতে হয়।’
পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী (অবসরপ্রাপ্ত) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘পৌরসভার পানি বণ্টনে নানাবিধ সমস্যা রয়েছে। ৫০ বছর আগে পাইপ লাইন স্থাপন করা হলেও সেই লাইনগুলো আর সংরক্ষণ করার সুযোগ নেই। সবগুলো পাইপ রাস্তা প্রশস্ত হওয়ার কারণে রাস্তার মাঝখানে পড়ে গেছে। দীর্ঘদিন পরিষ্কার না করার কারণে পাইপগুলোতে মরিচা ধরে গেছে। শেওলা জমে অধিকাংশ জায়গা লিকেজ হয়ে বাইরের ধুলো ময়লা ভেতরে প্রবেশ করে পানিকে নষ্ট করে দিচ্ছে। তা ছাড়া পাইপ ওয়াশ করার যে স্থান ছিল সে গুলো না থাকায় এবং খাল ভরাট পানি বের করে দেওয়াও সম্ভব হচ্ছে না।’
রাজবাড়ী পৌরসভার প্যানেল মেয়র নির্মল কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘পাইপগুলো অনেক পুরোনো। রাস্তা প্রশস্ত করা হলেও পাইপের অবস্থান সেখানেই রয়েছে। ফলে পাইপগুলো মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না। নতুন করে পাইপ লাইন বসানোর চিন্তা করা হচ্ছে।’