দোয়ারাবাজার সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসিক ভবনটি ১৯৮০ সালের দিকে প্রতিষ্ঠিত। এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভবনটি ছাত্রাবাস এটি। অথচ দীর্ঘদিন অবহেলায় পড়ে আছে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দাবি দ্রুত ভবন সংস্কার করে বসবাসের উপযোগী করার।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা সদরের পশ্চিম বাজারে সুরমা নদীর তীরঘেঁষে প্রায় ৩০ বছরের পুরোনো এই ছাত্রাবাসের অবস্থান। সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদসহ হাইস্কুলের বেশ কয়েকজন শিক্ষক এখানে অবস্থান করে শিক্ষকতা করেছেন। হাইস্কুলের সূচনালগ্নে এই ছাত্রাবাসটি দীর্ঘদিন শ্রেণিকক্ষ হিসেবেও ব্যবহার করা হয়েছে। আশির দশকে যখন উপজেলায় আর কোনো হাইস্কুল ছিল না, তখন অনেকে দূর-দূরান্ত থেকে এসে এখানে পড়াশোনা করত।
স্থানীয়রা জানান, ছাত্রাবাসটিতে এখন আর কোনো ছাত্র থাকে না। কয়েকজন বহিরাগত উদ্বাস্তু ভিক্ষুক ছাত্রাবাসের দুটি কক্ষে বসবাস করে করছে। দীর্ঘদিন ধরে কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় এটিতে এখন প্রতি রাতেই মাদকাসক্ত বখাটেদের আড্ডা বসে।
ছাত্রাবাসে গিয়ে দেখা যায়, সংস্কারের অভাবে অনেকটাই পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে ভবনটি। দুটি ছাত্রাবাস ভবনের একটি কোনো কাজেই আসছে না। অপরটিতে কয়েকজন ভিক্ষুক বসবাস করছেন। পুরোনো টিনশেড মরিচা পড়ে ছিদ্র হয়ে গেছে। অনেক জায়গায় টিনশেডের চাল ও বেড়া ভেঙে পড়েছে।
দোয়ারাবাজার সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আব্দুল আজাদ রুমান বলেন, ‘এই ছাত্রাবাসে থেকে আমরা লেখাপড়া করেছি। এর সঙ্গে আমাদের ছাত্রজীবনের স্মৃতি জড়িয়ে আছে। এটি দ্রুত সংস্কার ও আধুনিকায়ন করে পুনরায় চালুর দাবি জানাই।’
ছাত্রাবাস বিষয়ে জানতে চাইলে এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালেক বলেন, ‘২০১৭ সালে এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি সরকারীকরণ করার পর প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কোনো ফান্ড নেই। ফলে ছাত্রাবাসটি সংস্কার করা যাচ্ছে না। আমাদের স্থানীয় সাংসদের কাছে একটি ছাত্রাবাস ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়েছি।’
করোনাকালে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় আর কোনো ছাত্র থাকে না। তা ছাড়া ছাত্রাবাসে এখন আর কোনো ছাত্র, শিক্ষক থাকতেও আগ্রহী না। ছাত্রাবাসের আট শতাংশ জমি নিয়ে সম্প্রতি জটিলতা তৈরি হয়েছে। ছাত্রাবাস ভবনের দখলি জমি একজন ব্যক্তির নামে নামজারি করে ফেলছে বলে জানান শিক্ষক আব্দুল মালেক।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেবাংশু কুমার সিংহ জানান, ছাত্রাবাসের জমির মালিকানা নিয়ে জটিলতা রয়েছে। এ ছাড়া করোনাকালে দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ছাত্রাবাসটিও বন্ধ ছিল। তবে এখানে কোনো বহিরাগত বা বখাটেদের উপস্থিতি থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।