মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার রাউৎগাঁওয়ে বেইলি সেতুর প্লেট ভেঙে গেছে। গতকাল সোমবার এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত প্রায় ৫ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। এ অবস্থায় ভোগান্তিতে পড়েছেন চলাচলকারীরা।
সোমবার সকাল ১০টার দিকে কুলাউড়া-রবিরবাজার সড়কের ফানাই নদীর ওপর থাকা এ সেতুতে স্টিলের প্লেট ভেঙে যায়। ফলে সেতুর দুই পাশে শতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে। সেতুটি অনেক পুরোনো হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে চার ইউনিয়নের মানুষ।
এদিন বেলা ৩টা পর্যন্ত সড়ক ও জনপথ বিভাগের লোকজন সেতুটি সচলের জন্য কাজ করেন। এ নিয়ে গত দুই বছরে ১৫ বার সেতুর ট্র্যানজাম, পাটাতন ও প্লেট ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটল।
স্থানীয় বাসিন্দা তাজুল ইসলাম, এম এ কাইয়ূম ও সাফি চৌধুরী পলিট জানান, জোড়াতালি দিয়ে লোকদেখানো মেরামত করার কারণে সেতু ঘন ঘন ভাঙছে। প্রতিদিন এ সেতু দিয়ে বাস-ট্রাকসহ ভারী যান চলাচল করে। অথচ এভাবে চলাচল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
কোনো দিন হঠাৎ সেতুটি পুরো ধসে পড়তে পারে। ঘটতে পারে প্রাণহানিসহ বড় ধরনের দুর্ঘটনা। সোমবারও সেতুটি বিকল হয়ে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ থাকে। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে দ্রুত পাকা সেতু প্রয়োজন। তা না হলে এ পথে সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
পৃথিমপাশার রবিরবাজারের বাসিন্দা আব্দুল আহাদ ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক শাহীন আহমদ বলেন, সেতুটির পাটাতন ও স্টিলের প্লেট নড়বড়ে। ছোট একটি গাড়ি সেতুতে উঠলে প্লেট খুলে যায়। বারবার সেতু বিকল হলেও শুধু কোনো রকম জোড়াতালি আর মেরামতে চালু করা হয়। বারবার সেতুটি বিকল হয়ে এ রুটে চলাচলকারীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। মেরামত শেষ হওয়া পর্যন্ত বিকল্প আট কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে কুলাউড়া শহরে যেতে হবে।
রাউৎগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল জামাল বলেন, সেতুটি অনেক পুরোনো ও ঝুঁকিপূর্ণ। ভারী যানবাহন চলার কারণে এটির ট্র্যানজামসহ বিভিন্ন জায়গা ভেঙে যায়। গত বছর একাধিকবার ট্র্যানজাম ভেঙে এ সেতু দিয়ে যান চলাচল বন্ধ ছিল। সোমবার ফের সেতুর একটি প্লেট ভেঙে গেছে।
মৌলভীবাজারের সড়ক ও জনপথ বিভাগ কুলাউড়া কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী সুভাষ পুরকায়স্থ বলেন, ‘ভাঙনের খবর পেয়ে আমরা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে লোক পাঠাই। সোমবার সকাল থেকে সেতুর প্লেট সংস্কারে কাজ চলছে। আশা করছি, সন্ধ্যার দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক হবে।’
সড়ক ও জনপথ বিভাগ মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জিয়া উদ্দিন বলেন, ‘সেতুটি নতুন করে নির্মাণের জন্য প্রাথমিক অনুমোদন হয়েছে। সপ্তাহ দু-একের মধ্যে চূড়ান্ত অনুমোদন হবে। এরপর আগামী দুই মাসের মধ্যে নতুন সেতু নির্মাণের টেন্ডার আহ্বান করা হবে। চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে সেতুটির নতুন নির্মাণকাজ শুরু করতে পারব বলে আশা রাখছি।’