বৈরী আবহাওয়া ও গরমের তীব্রতায় শেরপুরের নকলায় হঠাৎ করেই বাড়ছে জ্বর, সর্দি, কাশি ও মাথা ব্যথা রোগীর সংখ্যা। সব বয়সী মানুষ এসব সমস্যায় আক্রান্ত হলেও শিশু ও বয়স্করা তুলনামূলকভাবে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
গত কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণ এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে সৃষ্ট বন্যার পর থেকে এসব রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকেরা বলছেন, এগুলো ‘সিজনাল ফ্লু’ হতে পারে। তারপরও দেশে যেহেতু করোনাভাইরাসে শনাক্তের সংখ্যা বাড়ছে, তাই নমুনা পরীক্ষার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যাঁরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা নিতে আসছেন, তাঁদের নমুনা পরীক্ষার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যাঁরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন, তাঁদের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।
আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রচণ্ড জ্বর, ঘাম, নাক দিয়ে পানি ঝরা, কাশি ও মাথা ব্যথার মতো উপসর্গ রয়েছে। সঙ্গে কারও কারও রয়েছে পেটে ব্যথা ও পাতলা পায়খানা।
পাঠাকাটা ইউনিয়নের সালুয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল জলিল জানান, এক সপ্তাহ আগে তিনি জ্বর, সর্দি ও কাশি নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। এখন সমস্যা কিছুটাকমলেও শারীরিক দুর্বলতা ও অরুচিতে ভুগছেন তিনি।
বানেশ্বর্দী ইউনিয়নের বানেশ্বর্দী মোজার গ্রামের মিন্টু মিয়া (৬০) বলেন, জ্বর, কাশি, অরুচি ও শারীরিক দুর্বলতা নিয়ে গতকাল শনিবার সকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তিনি।
নকলা ইউনিয়নের ধনাকুশা গ্রামের স্কুলছাত্র নয়ন মিয়া (১৬) জানান, জ্বর নিয়ে তিনি চার দিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বেডে শুয়ে আছেন।
গৌড়দ্বার ইউনিয়নের গৌড়দ্বার গ্রামের শরিফ মিয়া (৬২) বলেন, জ্বর নিয়ে গত বৃহস্পতিবার তিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। পরীক্ষায় তাঁর টাইফয়েড ধরা পড়ায় তাঁকে আরও কয়েক দিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক।
স্থানীয় বাসিন্দা রুহুল আমিন জানান, দুদিন ধরে তিনি প্রচণ্ড জ্বর, সর্দি ও মাথা ব্যথা নিয়ে বাসায় শয্যাশায়ী। স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করছেন। করোনা টিকার তিনটি ডোজ নিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মানিক মিয়া বলেন, প্রতিদিন জ্বর, ঠান্ডা-কাশি ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ওয়ালিউল্লাহ বলেন, প্রতিদিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জ্বর, শ্বাসকষ্ট, মাথাব্যথা ও ঠান্ডা-কাশি নিয়ে নতুন নতুন রোগী আসছেন। চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি তাঁদের নমুনা পরীক্ষার পরামর্শসহ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে নেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, আবহাওয়াজনিত কারণে কিংবা কোভিডের ভাইরাল সংক্রমণের কারণে এলাকায় জ্বর ও ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। তবে এখন পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষায় কারও করোনা
শনাক্ত হয়নি। তবে লক্ষণ থাকলে সেবা দেওয়ার আগে নমুনা পরীক্ষার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।