পীরগাছায় চুরির দায় চাপিয়ে ১২ বছরের শিশুকে মারধর এবং শরীরে সুচ ফুটিয়ে নির্যাতনের মামলায় এক পশু চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম জাহিদুল ইসলাম। তাঁকে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর জেলহাজতে পাঠানো হয়।
ভুক্তভোগী শিশু আবু জাহিদ উপজেলার অন্নদানগর ইউনিয়নের নবু পাঠানপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল আউয়াল মিয়ার ছেলে। সে স্থানীয় সাতদরগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
জাহিদকে নির্যাতনের ঘটনাটি ৩১ জানুয়ারি ঘটলেও এত দিন তা স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করা হয়। তবে পরে মামলা হলে গত বুধবার রাতে জাহিদুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
থানায় দেওয়া অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জাহিদ ও তার মা সাবিনা খাতুন ৩১ জানুয়ারি রাতে ঘুমিয়ে ছিল। রাত সাড়ে ১২টার দিকে প্রতিবেশী জাহিদুল কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে সাবিনাদের বাড়িতে যান এবং তাঁর বাড়ি থেকে টাকা চুরি হয়েছে বলে দুজনকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন।
এ সময় জাহিদকে ধরে জাহিদুলের বাড়ির একটি কক্ষে আটকে রেখে মারধর এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে সুচ ঢুকিয়ে নির্যাতন করা হয়। পরে তার চিৎকারে মা সাবিনা এগিয়ে আসেন এবং এলাকাবাসীর সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। পরে এ বিষয়ে বিচারের নামে কালক্ষেপণ ও ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও কোনো সমাধান হয়নি।
এদিকে শিশু জাহিদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ৮ ফেব্রুয়ারি তাকে পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেই সঙ্গে তার মা সাবিনা বাদী হয়ে পীরগাছা থানায় অভিযোগ করেন।
সাবিনা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। তাই কোনো বিচার পাই না। আমার ছাওয়াটাক নিয়া যায়া এইভাবে মারল কেউ প্রতিবাদ করল না। বিচার হয়-হইবে বলে আর হইলো না। তারা হামাকও মারছে। হামার ঘর থাকি টাকা নিয়া গেইছে। তাই থানাত মামলা দিছি।’
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পীরগাছা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল ওয়াদুদ মিয়া বলেন, ‘অভিযোগের পর বুধবার রাতে অভিযুক্ত পশু চিকিৎসক জাহিদুল ইসলামকে স্থানীয় সাতদরগা বাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার তাঁকে রংপুর জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।’