টানা দুই দিন ঝড় ও বৃষ্টির পর কুড়িগ্রাম জেলাজুড়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। মাঘের শেষ সময়ে তীব্র শীতে কাবু হয়ে পড়েছেন চিলমারী উপজেলার মানুষ। গতকাল রোববার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিছুর রহমান বলেন, ‘গত দুদিন টানা ঝড় ও বৃষ্টির পর জেলাজুড়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। যা আগামী দুই-তিন দিন অব্যাহত থাকতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কনকনে শীত ও হিমেল হাওয়ায় কাঁপছে মানুষজন। ঘন কুয়াশায় হেড লাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন। বেশি বিপদে পড়েছেন উপজেলার খেটে খাওয়া মানুষ। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন অনেকেই।
চিলমারী ইউনিয়নের করাইবরিশাল এলাকার দিনমজুর রাজু মিয়া, আমিনুল ইসলাম ও আলমগীর মিয়া জানান, গত দুদিন ঝড় ও বৃষ্টির কারণে তাঁরা কাজে যেতে পারেননি। এতে তাঁদের ঘরে খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। এভাবে ঘরে বসে থাকলে পরিবারের সদস্যদের অনাহারে থাকতে হবে। কিন্তু তীব্র শীত উপেক্ষা করে ঘর থেকে বের হলেও কাজ না জোটার আশঙ্কা তাঁদের।
শীতবস্ত্রের অভাবে ঠান্ডায় কাবু হয়ে পড়ছেন চিলমারী উপজেলার ২০টি চরের মানুষ বিশেষ করে শিশু-বৃদ্ধরা কাবু হয়ে পড়েছেন। একই পরিস্থিতি নদ-নদী সংলগ্ন বাঁধে আশ্রয় নেওয়া মানুষজনেরও। শীতে গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা। রিকশা-ভ্যানের চালক, ঘোড়ার গাড়ি চালক, দিনমজুর ও ব্যবসায়ীদের কনকনে শীত ও হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করেই দুর্ভোগ নিয়েই শহরে আসতে দেখা গেছে।
থানাহাট ইউনিয়নের ভ্যানচালক আব্দুল গফুর জানান, হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় শরীর থর থর করে কাঁপছে। কিন্তু যতই ঠান্ডা হোক আয় করে অসুস্থ সন্তানের ওষুধ নিয়ে বাড়িতে ফিরবেন বলে জানান তিনি।
ঘোড়ার গাড়ি চালক বাদশা মিয়া জানান, ঠান্ডায় হাত-পা অবশ হয়ে আসছে। ভোরে ভাড়ার সন্ধানে ঘর থেকে বের হলেও শীতবস্ত্রের অভাবে বিপাকে পরেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আমরা ঠান্ডায় কাঁপলেও আমাদের দেখার কেউ নেই।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘উপজেলায় ৪ হাজার ৪১৫টি কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আরও নয় লাখ টাকা ও ২০০টি কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। পর্যায়ক্রমে শীতার্ত মানুষের মধ্যে সেগুলো বিতরণ করা হবে।’