হোম > ছাপা সংস্করণ

ছোট মেস্তা ফলের বড় গুণ

মো. ফরিদ রায়হান অষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ)

ফলের নাম মেস্তা। অনেকেই চেনেন না। গাঢ় লালবর্ণের টক স্বাদযুক্ত ও জলপাই সবুজ রঙিন পাতার উপগুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ ফল এটি। মেস্তাগুডা বা চুকাই নামে ডাকা হয়। ইংরেজি নাম রোজেল ও সরেল। ফলটির আদি নিবাস আফ্রিকা। বাংলাদেশের বহু জায়গায় এখন দেখতে পাওয়া যায়। কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা অষ্টগ্রামে এই টকজাতীয় ফলটি বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয়। মেস্তাগুডা চাষে অনেকে লাভবান হচ্ছেন, এ রকম একজন হলেন পূর্ব অষ্টগ্রামের সমীর দেব।

মেস্তা ফল, আবার মেস্তা সবজিও। দৃষ্টিনন্দন শীতকালীন এ সবজি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পরিচিত হইলফা, অম্বলমধু, চুকুর, মেডস, চুক্কাগুডা, মেস্তাগুডা, চুকাই, চুকাপাতা, টেঙ্গাপাতাসহ বাহারি সব নামে। পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারে বেশ প্রসিদ্ধ এ ফল। হরেক রকম ওষুধি গুণ আছে এ ফলের। মুখরোচক জ্যাম-জেলি তৈরিতেও ব্যবহৃত হয় এই মেস্তাগুডা।

বিভিন্ন দেশে মেস্তাপাতা ভেষজ চা হিসেবে খাওয়া হয়, এ রকমটাই জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। বাংলাদেশে ভর্তা ও তরকারি রান্নায় ব্যবহৃত হয় মেস্তা। মেস্তাগুডা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, এটি মূত্রবর্ধক, মৃদু কোষ্ঠকাঠিন্য, হৃদরোগ, ক্যানসার ও স্নায়ু রোগ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ক্যালসিয়াম, ভিটামিন, ক্যারোটিন ও প্রোটিনসহ পুষ্টিগুণসম্পন্ন এ ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পেকটিন।

আমড়া, জলপাই, তেঁতুল, ডেউয়া, সাতকরা ফলের বিকল্প হিসেবে মেস্তাগুডা ও মেস্তাপাতা দিয়ে খাট্টা বা টক রান্না করা হয়। মেস্তাগুডার গাছের আঁশ পাটের বিকল্প হিসেবে কাজে লাগানো যায়। এ ছাড়াও, বীজ হতে ভোজ্যতেল উৎপাদন করা যায়।

গত মঙ্গলবার সকালে পূর্ব অষ্টগ্রাম ইউনিয়নের নরসিংহ দেব আখড়ার পুকুরপাড়ে গিয়ে দেখা যায়, ৮ শতাংশ ঢালু জায়গায় মেস্তাগুডা চাষ করেছেন সমীর দেব। তিনি ১ হাজার টাকায় জমি পত্তন নিয়ে চাষ করেছেন মেস্তাগুডা। চারা ও যত্নসহ খরচ করেছেন সাড়ে ৪ হাজার টাকা। ৯০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে ইতিমধ্যে ৯ হাজার টাকার মেস্তাগুডা বিক্রি করেছেন। সমীর দেব জানান, এবার ১৫-১৮ হাজার টাকার মেস্তাগুডা বিক্রি করবেন। পরে গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হবে।

১৫ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত বীজ বপন বা চারা রোপণ করার ভালো সময় ধরা হয়। ঢালু জায়গা, পুকুর, বাড়ি ও পরিত্যক্ত জায়গা ও জমিতে পানিনিষ্কাশনে উপযুক্ত নালা রেখে মেস্তাগুডার বীজ ও গাছ রোপণ করতে হয়। এ ছাড়া, জমি চাষ-মই দিয়ে মেস্তাগুডা বপন করা হয়। চারা রোপণের ১৩০-১৪০ দিনে ফুল আসে ফল ধরে।

এবার অষ্টগ্রামে প্রায় ১০ একর জমিতে মেস্তাগুডা চাষ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। তবে, উপজেলা কৃষি অফিসের মতে, চাষ হয়েছে সাড়ে ৭ একর জমিতে। কম যত্নে অধিক পুষ্টি ও ওষুধিগুণে ভরা মেস্তাগুডা উঠানে চাষ করে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে আয় করেন নারীরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালক মো. ছাইফুল আলম বলেন, ‘চুকাই একটি সম্ভাবনাময় সবজি। এর ব্যাপক চাষে স্বাবলম্বী হবে কৃষকেরা। মূল জমির বাইরে পরিত্যক্ত জায়গায় চুকাই চাষ করে নিজেদের পুষ্টি চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি আয় করা সম্ভব। উৎসাহী কৃষকদের আমরা সহায়তা করে থাকি।’

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ