গত রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার হারাগাছ পৌরসভার পশ্চিম পোদ্দারপাড়া বাঁধেরপাড় গ্রামে স্বামীর বাড়ি থেকে ওই গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ইতি আক্তার হারাগাছ পৌরসভার পশ্চিম পোদ্দারপাড়া বাঁধেরপাড় গ্রামের রমজান আলীর স্ত্রী এবং ফাতাংটারী গ্ৰামের সবজি বিক্রেতা আয়নাল হকের মেয়ে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ইতি আক্তারের সঙ্গে প্রায় আট মাস আগে রমজানের বিয়ে হয়। ইতি আক্তার রমজানের দ্বিতীয় স্ত্রী। বিয়ের পর কিছুদিন স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক ভালোই ছিল। তিন মাস আগে ইতি অন্তঃসত্ত্বা হলে পরিবারে কাজকর্ম করতে না পারায় স্বামী রমজান তাঁকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু করেন। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ইতি আক্তার এক মাস আগে বাবার বাড়িতে আসেন। গত শুক্রবার রমজানের দুই ভাই ইতির বাবার বাড়িতে গিয়ে বুঝিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসেন। গত রোববার দুপুরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রমজান ঘরের দরজা বন্ধ করে অন্তঃসত্ত্বা ইতিকে বেধড়ক মারপিট করেন। বিকেলে শোবার ঘরের তীরের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় ইতিকে দেখতে পান পরিবারের লোকজন।
হারাগাছ থানার উপপরিদর্শক আশিকা সুলতানা জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে। ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ রমজান।
ইতি আক্তারের মা ছামিনা বেগম জানান, অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার সংসারের কাজকর্ম করতে পারতেন না ইতি। এ জন্য রমজান তাঁকে নির্যাতন করতেন। রোববার বিনা কারণে ইতিকে বেধড়ক মারপিট করেন। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরেই ইতি আত্মহত্যা করেছেন।
ইতির বড় বোন লাকী আক্তার বলেন, ‘রমজান ও তাঁর পরিবারের লোকজন ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালায়। আমার ছোট বোন আত্মহত্যা করেনি, তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।’
হারাগাছ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, ‘ওই গৃহবধূর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে তাঁকে ভারী কোনো কিছু দিয়ে মারপিট করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে একটি ইউডি মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’