আমাদের লোকসংস্কৃতির অন্যতম এক শাখা পুতুলনাচ বা পুতুলনাট্য। হাল আমলে এটা পাপেট শো হিসেবেও পরিচিত। পুতুলনাট্য হলো একটি সমন্বিত শিল্পকলা। এটা কেবল বিনোদনের মাধ্যম নয়, এর মাধ্যমে যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ ও শিক্ষণীয় বার্তা সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়। তাই ২০১৯ সালের ২৬ আগস্ট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থীরা মিলে একটি দল গড়ে তোলেন। নাম রাখেন ‘কাকতাড়ুয়া পাপেট থিয়েটার’। তিনজন নিয়ে সংগঠনটি শুরু হলেও পরে সেই সংখ্যা সাতজনে দাঁড়ায়। সংগঠনের সদস্যরা হলেন আসাদুজ্জামান আশিক, প্রণয় সরকার, শাহনাজ শানু, সোহানা তানজিম, তুনতুন মজুমদার, জুবায়ের কিশোর ও ফারহানা আফরিন তিথি। এ ছাড়া তারেক, শিল্পী, নিশি, রিশা বিভিন্নভাবে কাজ করে সংগঠনকে সহায়তা করেন।
আশিক জানান, বিভিন্ন ধরনের পুতুলের মাধ্যমে পাপেট শো করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে সুতা পুতুল, দস্তানা পুতুল, ফিঙ্গার পাপেট, ওয়াটার পাপেট ইত্যাদি। ‘কাকতাড়ুয়া পাপেট থিয়েটার’ মূলত ফিঙ্গার পাপেট নিয়ে কাজ করে। এ ছাড়া বিভিন্ন শোর প্রয়োজনে সুতা পুতুল, গ্লাভস পাপেট ও মাপেট ব্যবহার করেন তাঁরা। কাকতাড়ুয়া পাপেট থিয়েটার নিজের পুতুল নিজেরাই তৈরি করে বলে জানান তিনি। আশিক জানালেন, সাধারণত ফেলে দেওয়া জিনিসপত্র দিয়ে পাপেট বানানো হয়। ব্যবহার করা হয় ককশিট, থার্মোকল, আঠা, সুই, সুতা, কাপড় ইত্যাদি।
পাপেট থিয়েটারের কাজ সম্পর্কে আশিক বলেন, শিশুদের আনন্দদায়ক শিক্ষা ও বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে কাকতাড়ুয়া পাপেট থিয়েটার কাজ করে। এ ছাড়া বয়স্ক শিক্ষা, সমাজসচেতনতা ও বিভিন্ন ক্যাম্পেইনে এসব পাপেট ব্যবহার করা হয়।
কাকতাড়ুয়া পাপেট থিয়েটারের প্রযোজনার মধ্যে রয়েছে, ‘দুই বন্ধু ও ভাল্লুক’, ‘নিরাপদ সড়ক’, ‘খুশির গল্প’, ‘স্বাধীনতার গল্প’, ‘গাছ বন্ধু’, ‘হাতি রক্ষা’ ইত্যাদি। এ ছাড়া বিভিন্ন পথনাটক ও মাপেট নিয়ে ক্যাম্পেইন করেছে তারা।