মার্ক টোয়েনের মতো আমুদে লেখক ইতিহাসে বিরল। জীবনটাকে তিনি আনন্দময় করে রেখেছিলেন। রাস্তা দিয়ে যখন চলতেন, তখন সঙ্গীর সঙ্গে রসিকতা করতেন। হাসির গল্প বলতেন। মার্ক টোয়েনের গল্প শুনে না হেসে কেউ মুখ বন্ধ রাখবে—এ রকম ঘটনা কখনো ঘটেনি। তবে ঘটল একবার।
একটা ছোট শহরে মার্ক টোয়েনের বক্তৃতার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেখানে গিয়ে অবসরে হাঁটছিলেন রাস্তা দিয়ে। এক যুবক মার্ক টোয়েনকে থামালেন। বললেন, আমার এক চাচা রয়েছে, যিনি কখনোই হাসেন না। জোরে হাসির তো প্রশ্নই ওঠে না, এমনকি মৃদু হাসিও তাঁর ঠোঁটে দেখা যায় না।
মার্ক টোয়েন সেই যুবককে বললেন, তাঁর লেকচারে যেন চাচাকে নিয়ে আসেন।
বিকেলে চাচাকে নিয়ে সত্যিই হাজির হলেন সেই যুবক। বসলেন একেবারে সামনের সারিতে। তাঁদের দিকে তাকিয়েই মার্ক টোয়েন একের পর এক কৌতুক বলে যেতে লাগলেন। এবং দেখলেন, যুবকটি মিথ্যে কিছু বলেনি। সবাই হাসছে, শুধু ছেলেটির চাচা মুখ চেপে বসে আছেন! তখন মার্ক টোয়েন ভেবে ভেবে সবচেয়ে হাসির গল্পগুলো বলতে লাগলেন। রামগড়ুরের ছানারাও হাসতে বাধ্য হতো, এমন গল্পও করলেন, কিন্তু কোনো ফল হলো না।
কাজ যখন হলো না, তখন মেজাজ খারাপ করে লেকচার শেষ হলে হল থেকে বেরিয়ে গেলেন লেখক। বিষয়টা খুব ভাবাল মার্ক টোয়েনকে। কিছুতেই তা থেকে বেরিয়ে আসতে পারছিলেন না তিনি। এরপর এক বন্ধুর সঙ্গে যখন কথা বলছেন, তখন সেই প্রসঙ্গটিতে এলেন তিনি।
‘আমি দারুণ সব রসিকতা করেও এক বৃদ্ধকে আজ হাসাতে পারিনি।’ বন্ধুকে বললেন মার্ক টোয়েন।
বন্ধুটি একগাল হেসে বললেন, ‘এই নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেছ, বন্ধু? ভুল করছ। আমি সেই বৃদ্ধকে চিনি। কয়েক বছর ধরেই চিনি। অনেক বছর ধরেই তিনি তো কানে শোনেন না।’
মার্ক টোয়েনের কোনো রসিকতাই যে তাঁর কান পর্যন্ত পৌঁছায়নি, এটা জেনে এবার হো হো করে হেসে উঠলেন লেখক নিজে।
সূত্র: লাইভলিবডটরু