রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামের নুরুন্নবী ওরফে আইয়ুব নবী ওরফে নবী হত্যা মামলায় এক নারীসহ দুজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি দুজনকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুর ১২টায় রাজশাহীর জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আকবর আলী শেখ এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুজন হলেন কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামের মো. দেরাজ মিস্ত্রির স্ত্রী ফুলজান বিবি (৪০) এবং একই গ্রামের মফিজ উদ্দিন (৪৫)। এ মামলায় দেরাজ মিস্ত্রিও আসামি ছিলেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাঁকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আসাদুজ্জামান মিঠু জানান, ফুলজান বিবির সঙ্গে মফিজ উদ্দিন এবং নবীর পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ফুলজান দুজনের সঙ্গেই পরকীয়া প্রেম করতেন। একপর্যায়ে মফিজ উদ্দিন বিষয়টি জানতে পেরে ফুলজানকে চাপ দেন। তখন ফুলজান নবীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
ঘটনার দিন ২০১৩ সালের ১৫ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফুলজান দেখা করার কথা বলে কৌশলে নবীকে তাঁর বাড়ির পেছনে মুরগির খামারে ডাকেন। আর আরেক প্রেমিক মফিজের হাতে তুলে দেন হাঁসুয়া। মফিজ মুরগির খামারে গিয়ে এক কোপে নবীর শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে দেন। এরপর মফিজ ও ফুলজান একটি বস্তায় লাশ ভরেন। তারপর মফিজ গিয়ে লাশটিকে দূরে বিলে ফেলে আসেন। আর মাথাটিকে আরও এক কিলোমিটার দূরে পুঁতে রাখা হয়। পরদিন সকালে যখন লোকজন লাশ দেখতে পান, তখন ফোঁটা ফোঁটা রক্তের দাগ ফুলজানের মুরগির খামার পর্যন্ত দেখা যায়। পুলিশ ওই লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
হত্যাকাণ্ডের শিকার নুরুন্নবীর ছেলে হাসেম আলী বাদী হয়ে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরপর পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তার করে। পরে ফুলজান ও মফিজের দেখানো স্থান থেকে কাটা মাথা উদ্ধার করা হয়। তাঁরা দুজনে অপরাধ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। ২৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত তাঁদের মৃত্যুদণ্ড দিলেন।
রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতের কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন। রায়ের পর তাঁদের রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। আদালতে আসামিদের পক্ষে মামলাটির পরিচালনা করেন আইনজীবী একরামুল হক-২ ও আবদুল মালেক রানা।