হোম > ছাপা সংস্করণ

পাবনায় ১৯৩ ইটভাটার ১৫৩টিই অবৈধ

শাহীন রহমান, পাবনা 

পাবনায় ১৯৩টি ইটভাটার মধ্যে অনুমোদন রয়েছে মাত্র ৪০টির। বাকি ১৫৩টি ইটভাটারই নেই অনুমোদন বা ছাড়পত্র। ফলে একদিকে প্রতিবছর সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে। অন্যদিকে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। সেই সঙ্গে হ্রাস পাচ্ছে বন ও কৃষিজমি।

অভিযোগ রয়েছে, উপজেলার জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ ও প্রশাসনের যোগসাজশে চলছে এসব অবৈধ ইটভাটা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্যমতে পাবনা জেলায় ১৯৩টি ইটভাটা থাকলেও ভাটা মালিকদের দেওয়া তথ্যে জেলায় বর্তমানে ২৮০টি ইটভাটা রয়েছে।

পাবনা পরিবেশ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, পাবনা সদর উপজেলায় ৭১টি ইটভাটার মধ্যে বৈধ ভাটা ১৫টি। ঈশ্বরদীতে ৫০টির মধ্যে বৈধ পাঁচটি। আটঘরিয়া উপজেলায় বৈধ একটি, অবৈধ একটি। চাটমোহরে ছয়টির চারটি বৈধ। সুজানগরে ১৭টির মধ্যে নয়টি বৈধ। বেড়া উপজেলায় ১৬টির বৈধ চারটি ভাটা। ভাঙ্গুড়ায় সাতটির মধ্যে বৈধ দুইটি। ফরিদপুর ও সাঁথিয়ায় ১১টি করে ইটভাটা থাকলেও একটিরও অনুমোদন নেই।

সম্প্রতি পাবনার কয়েকটি উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, কৃষিজমি থেকে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। অন্যদিকে কয়লার পরিবর্তে কাঠ পুড়িয়ে ইট প্রস্তুত করা হচ্ছে।

ফলে একদিকে কৃষিজমি হ্রাস পাচ্ছে। অন্যদিকে বনায়ন ধ্বংস হচ্ছে। ফলে সার্বিকভাবে পরিবেশ বিপর্যয় হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অবৈধ ইটভাটার মালিক বলেন, তাঁরা বৈধভাবে ইট প্রস্তুত করতে চান। কিন্তু  অনুমোদন নিতে গিয়ে নানা হয়রানির শিকার হতে হয়। তাই অনৈতিক পথে এই ব্যবসা করছেন।

বিভিন্ন সময়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার বিষয়ে জানতে চাইলে অবৈধ ইটভাটার মালিকেরা বলেন, প্রতিপক্ষের লোকজন ষড়যন্ত্র করে মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত ডেকে আনে। তখন পুলিশ-প্রশাসনকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করতে হয়।

চাটমোহর উপজেলার সিটিবি ইটভাটার মালিক আবদুল খালেক বলেন, ‘অনুমতি নিয়ে তো কাজ করা হয়। সেভাবেই করছি।’ তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র আছে কি না এবং লাইসেন্স পেয়েছেন কি না, জানতে চাইলে তিনি মোবাইল ফোন কেটে দেন।

বৈধ ইটভাটার মালিক রুহুল আমিন বিশ্বাস রানা বলেন, ‘আমরা কয়লা দিয়ে পরিবেশবান্ধব চিমনি ব্যবহার করে ইটভাটা চালাই। এতে উৎপাদন খরচ বেশি হয়। কিন্তু অবৈধ ভাটাগুলো চিমনি ব্যবহার না করায় তাঁদের খরচ কম হয়। কম দামে ইট বিক্রি করে। ফলে তাঁদের সঙ্গে পেরে উঠছি না। তাই এই মৌসুমে ভাটা বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছি।’

জেলায় বিভিন্ন ইটভাটায় বন ধ্বংস করে প্রকাশ্যে কাঠ পুড়িয়ে ইট তৈরির বিষয়ে জানতে চাইলে পাবনার সামাজিক বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাশ্যপি বিকাশ চন্দ্র বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি। ডিসি অফিসে মিটিং করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ইতিমধ্যে নেওয়া হয়েছে।’

পরিবেশ অধিদপ্তর পাবনার সহকারী পরিচালক নাজমুল হোসাইন বলেন, ‘আমার জনবলসংকটের কারণে কোনো অভিযান চালাতে গেলে জেলা প্রশাসনের মুখের দিকে চেয়ে থাকতে হয়। যে কারণে আমার দপ্তর থেকে অভিযান পরিচালনা করাটা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।’

জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন বলেন, ‘অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পাবনা সদর, ঈশ্বরদী, সাঁথিয়া ও বেড়ায় বেশ কিছু ইটভাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অর্থদণ্ডসহ নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অবৈধ ইটভাটার মালিকদের বলব, আপনারা লাইসেন্স নিয়ে পরিবেশবান্ধব ব্যবসা করুন।’

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ