ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করে ঋণের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে অনেক সময় সংকোচ বোধ করেন প্রান্তিক কৃষকেরা। তাই চাষাবাদের জন্য তাঁরা চড়া সুদে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নেন। সেই ঋণের বোঝা টানতে গিয়ে লাভের মুখ দেখতে পান না। ব্যাংক থেকে ৪ শতাংশ হার সুদে ঋণ নেওয়া যায় এই তথ্যই জানে না অনেক কৃষক। এমন তথ্য কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে টুঙ্গিপাড়ায় ব্যাংক কর্মকর্তা ও কৃষকদের নিয়ে মাঠ দিবস পালন করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার বিকেলে ডুমুরিয়া ইউনিয়নের লেবুতলা গ্রামে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে এই মাঠ দিবস পালিত হয়। মাঠ দিবসে ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী (ইউএনও) কর্মকর্তা একে এম হেদায়েতুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে ব্যাংক কর্মকর্তা ও কৃষকদের মধ্যে নানা বিষয়ে মতবিনিময় হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জামাল উদ্দিন এতে সভাপতিত্ব করেন। বক্তব্য দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একে এম হেদায়েতুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাকিবুল ইসলামসহ উপজেলার কৃষিঋণ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
টুঙ্গিপাড়া এক্সিম ব্যাংকের ম্যানেজার নাজমুল হাসান বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ৪ শতাংশ সুদে মসলাজাতীয় চাষাবাদে কৃষকেরা ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারবেন। কিন্তু কৃষকেরা সহজ শর্তে ঋণ পেতে ব্যাংকে যোগাযোগ করেন না। তারা চড়া সুদে বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নেন। তাই তাঁরা যাতে ব্যাংক থেকে সহজে ঋণ নিতে পারে সে জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উদ্যোগে ব্যাংক কর্মকর্তা ও কৃষকদের মধ্যে মতবিনিময় সভা হয়। কৃষকেরা ব্যাংক কর্মচারীদের কাছ থেকে ঋণ সম্পর্কিত তথ্য মাঠে বসেই পাবেন। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে সহজ শর্তে ও স্বল্প সুদে ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারবেন।
লেবুতলা গ্রামের কৃষক জাহিদুল ইসলাম বলেন, অনেকে বেসরকারি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে থাকেন। কিন্তু সুদের পরিমাণ বেশি থাকায় লাভের মুখ দেখা সম্ভব হয় না। স্বল্প সুদে ঋণ পেয়ে মসলাজাতীয় চাষাবাদ করলে দেশ ও দেশের কৃষক লাভবান হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একে এম হেদায়েতুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জনগণের দোরগোড়ায় সরকারি সেবা পৌঁছে দেওয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার। সেই অঙ্গীকারকে বাস্তবায়ন করতে ব্যাংক কর্মকর্তা ও কৃষকদের মধ্যে মতবিনিময়ের মধ্যে দিয়ে মাঠ দিবস পালিত হয়েছে। কৃষকেরা স্বল্প সুদে ঋণ নিয়ে স্বাবলম্বী হতে পারে সেই কারণে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে কৃষিকাজে উদ্যোক্তা বাড়বে ও বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে।’