হোম > ছাপা সংস্করণ

নারীদের কোচিংয়ে পথপ্রদর্শক ফাতেমা

ওমর ফারুক, ঢাকা

বাংলাদেশের আর্থসামাজিক বাস্তবতায় একজন মেয়ের ক্রিকেটার হওয়ার পথটাই মসৃণ নয়। সেখানে ক্রিকেট-জীবন শেষ করে কোচিং পেশায় আসা কতটা কঠিন, অনুমেয়। এই প্রেক্ষাপটে ফাতেমা তুজ জোহরা হয়েছেন একটি জাতীয় দলের কোচ। বাংলাদেশের সাবেক নারী ক্রিকেটার দেশ-বিদেশের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে এখন হয়েছেন মালদ্বীপ জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ।

ফাতেমার খেলোয়াড়ি-জীবন খুব বেশি লম্বা নয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগে স্নাতকোত্তর শেষে এখন কোচিংকেই আপন করে নিয়েছেন তিনি।

কদিন আগেই এক বিবৃতিতে ফাতেমাকে কোচ করার ঘোষণা দিয়েছিল মালদ্বীপ ক্রিকেট বোর্ড। এমন ঘোষণার পর থেকে সহপাঠী, সতীর্থ, শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রশংসায় ভাসছেন ফাতেমা। অথচ এত দূর আসার পথটা সহজ ছিল না তাঁর। ফাতেমা বলেছেন, ‘এখন যাঁরা আমাকে সমর্থন দিচ্ছেন, তাঁরা কিন্তু শুরুর সময়ে ছিলেন না। নিজের যোগ্যতায় এখানে আসার পর তাঁরা আমাকে সমর্থন দিচ্ছেন। কিন্তু এত দূর আসার পথচলাটা আমার একারই ছিল।’

ছোটবেলা থেকে জেদি আর সাহসী ফাতেমা। জেদই তাঁকে এগিয়ে যেতে সহায়তা করেছে। এখন মানুষের সমর্থনকে পুঁজি করে আরও অনেক পথ পাড়ি দেওয়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি, ‘আমাকে এখন আপনারা যে সমর্থন দিচ্ছেন, সেটা আমাকে আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করবে। আমি নিজেও বুঝতে পারিনি, দেশকে এতটা গর্বিত করছি। আমার এখন স্বপ্ন একজন বাংলাদেশি হয়ে আন্তর্জাতিক বড় বড় দলগুলোকে কোচিং করানো।’

ফাতেমার মতো এমন স্বপ্ন দেখতে পারা নারীর সংখ্যা বাংলাদেশে খুবই সামান্য। ক্রিকেটের পর কোন পেশায় যাবে, সেটাই খুঁজে পায় না অনেক মেয়ে। গত কিছুদিনে ছয়জন আম্পায়ারিং পেশায় নাম লিখিয়েছেন। তবে কোচিং পেশায় খুব একটা দেখা মেলে না তাঁদের। ডলি রানী সরকার, সাথিয়া জাকির জেসি ও রেশমা আক্তার আদুরীকে দেখা গেছে এক সঙ্গে আম্পায়ারিং আর কোচিংয়ের প্রশিক্ষণ নিতে।

ক্রিকেটে কোচিং পেশায় মেয়েদের আগ্রহ একটু কমই। আগ্রহ কম থাকার কারণ হিসেবে ফাতেমা বললেন, ‘বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কোচিং পেশা জনপ্রিয় নয়। পুরুষ কোচদের ক্ষেত্রেও একই বাস্তবতা। নারীরা কোচিং পেশায় আসবে, এটা তো বড় অজানা পেশা। তবে মালদ্বীপের মতো দেশ ছেলেমেয়ে হিসাব করে না। এখানে কোচ মানেই কোচ, হোক সে পুরুষ কিংবা নারী।’

বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটারদের জন্য অনুপ্রেরণা হতে চান ফাতেমা। তাদের চিন্তাভাবনা বদলে দিতে চান তিনি। ফাতেমা বলেছেন, ‘আমাদের দেশে নারীরা খেলা ছেড়ে দেওয়ার পর কোন পেশায় যাবে, সেটা এখনো ভাবতে পারে না। এ ধরনের কোনো সুযোগ-সুবিধা এখনো তৈরি হয়নি। তবে আমার বিশ্বাস তারা আমাকে দেখে যদি শিখতে পারে, তারাও একটা সময় কোচিংয়ে আসবে। আমি যেহেতু শুরুটা করেছি, চাইব আমাদের মেয়েরা যদি ইতিবাচকভাবে নিতে পারে বা সাহস করতে পারে, তাহলে অবশ্যই সাফল্য পাবে।’

এখন যাঁরা আমাকে সমর্থন দিচ্ছেন, তাঁরা কিন্তু শুরুর সময়ে ছিলেন না। নিজের যোগ্যতায় এখানে আসার পর তাঁরা আমাকে সমর্থন দিচ্ছেন।

 

নারী ক্রিকেটারদের পথপ্রদর্শক হতে চাওয়া ফাতেমাকে এত দূর আসতে যাঁরা সহায়তা করেছেন, তাঁদের প্রতি তাঁর অশেষ কৃতজ্ঞতা। ফাতেমা বলেছেন, ‘আমার কোচিং ক্যারিয়ারে অনেক বড় অবদান রেখেছেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল ভাই (সাবেক ক্রিকেটার)। আইসিসি লেভেল-২ করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন তিনি। আর বিকেএসপির পরিচালক প্রশিক্ষণ কর্নেল মিজানুর রহমানও আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন।’

ক্রিকেট, পড়ালেখা—সবকিছু ঠিকভাবে চালিয়ে যাওয়া ফাতেমার পরিকল্পনাজুড়ে এখন মালদ্বীপ নারী ক্রিকেটের উন্নয়ন। শূন্য থেকে শুরু করতে চান তিনি। আন্তর্জাতিক মঞ্চে কখনো জিততে না পারা মালদ্বীপের মেয়েদের জিততে শেখাতে চান ফাতেমা। একই সঙ্গে জিততে শেখাতে চান বাংলাদেশের নারীদেরও। যারা ভবিষ্যতে ফাতেমার দেখাদেখি পা রাখবে কোচিং পেশাতে। ভবিষ্যতের এ পথ চলায় ফাতেমা বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটারদের একপ্রকার পথপ্রদর্শক হয়ে গেছেন।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ