তারাগঞ্জ পশুর হাটে পশু কেনাবেচায় সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে বিক্রেতার কাছ থেকে টাকা আদায় করা হচ্ছে। রসিদ লেখকেরা বিভিন্ন অজুহাতে অবৈধভাবে এ টাকা আদায় করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে কয়েকজন রসিদ লেখকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আদায় করা অতিরিক্ত টাকা ইজারাদারকে দেন তাঁরা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় প্রায় ১৮টি হাটবাজার আছে। এর মধ্যে পশু বেচাকেনা হয় তারাগঞ্জ হাটে। প্রতি সোম ও শুক্রবার এ হাটে এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০টি গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া বেচাকেনা হয়। সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী একটি গরু বা মহিষের জন্য ৫০০ টাকা ও একটি ছাগল-ভেড়ার জন্য ১৫০ টাকা ক্রেতার কাছে খাজনা আদায় করার কথা। বিক্রেতার কাছে টাকা নেওয়ার নিয়ম নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তারাগঞ্জ হাটে রসিদ লেখকেরা ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের কাছ থেকেই টাকা আদায় করছেন। তাঁরা একটি গরু বা মহিষের জন্য ক্রেতার কাছ থেকে ৫০০ টাকা, বিক্রেতার কাছ থেকে ১৫০ টাকা এবং একটি ছাগল বা ভেড়ার ক্ষেত্রে ক্রেতার কাছ থেকে ১৫০ টাকা, বিক্রেতার কাছ থেকে ৬০ টাকা হারে খাজনা আদায় করছেন। তবে খাজনা আদায়ের ক্ষেত্রে ক্রেতাকে পশু ক্রয়ের রসিদ দেওয়া হলেও বিক্রেতার কাছ থেকে টাকা নেওয়ার রসিদ দেওয়া হচ্ছে না।
গত শুক্রবার পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় দেড় হাজারের মতো গরু, ছাগল, ভেড়া হাটে উঠেছে। হাটের মধ্যে চেয়ার-টেবিল নিয়ে বসেছেন রসিদ লেখকেরা। পশু কিনে এনে ক্রেতা-বিক্রেতা রসিদ লিখছেন। বিক্রেতাকে রসিদ ছাড়াই টাকা দিতে দেখা গেছে।
হাটে ছাগল কিনতে আসা পোদ্দারপাড়া গ্রামের মতিয়ার রহমান বলেন, রসিদ লেখকেরা ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়ের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে। ক্রেতার কাছ থেকে ১৫০ টাকা নেওয়ার পর রসিদ দিলেও বিক্রেতার কাছ থেকে অবৈধভাবে ৬০ টাকা আদায়ের রসিদ দেওয়া হচ্ছে না।
মধুপুর গ্রামের গরু বিক্রেতা জিয়াউল ইসলাম বলেন, ‘গরু বেচেয়া মুই ১৫০ টাকা চাঁদা দিনু। মুই রসিদ পানু না।’
বাহাগিলী গ্রামের রসিদ লেখক তুহিন ইসলাম বলেন, ‘ভাই আমরা যে রসিদ লেখি তাঁর কোনো মজুরি নাই। গরু প্রতি বিক্রেতার কাছ থেকে ১৫০ টাকা নেই। ১০০ টাকা হাট ইজারাদারোক দেই। বাকি ৫০ টাকা হামরা পাই। এইটাই হামার কামাই।’
জানতে চাইলে তারাগঞ্জ হাট ইজারাদার আব্দুল খালেক মুঠোফোনে বলেন, ‘আপনারা তো সবই জানেন, সবই বোঝেন। তারপরও প্রশ্ন করেন কেন? হাটে আগের ইজাদার যেভাবে খাজনা আদায় করছে। আমরাও সেভাবে করছি। এতে দোষ কি?
ইউএনও আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘পশুর হাটে দ্বিমুখী খাজনা আদায়ের কোনো সুযোগ নেই। অভিযোগের সত্যতা পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’