গঙ্গাচড়ায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন সামনে রেখে টাঙানো নৌকা প্রতীকে আগুন দেওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। সেই সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য লাঙ্গলের এক কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
উপজেলার নোহালী ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ টিটুল বাদী হয়ে গতকাল সোমবার এ মামলা করেন। একই দিনে লাঙ্গলের কর্মী রাকিবুল ইসলামকে নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়। তিনি নোহালী ইউনিয়নের পূর্ব কচুয়া গ্রামের বাসিন্দা।
গঙ্গাচড়া থানা-পুলিশ সূত্র জানা গেছে, গত শনিবার রাতে পূর্ব কচুয়া বাঁধের পাড় এলাকায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল ইসলামের বাড়ির সামনে দলীয় প্রার্থীর প্রচারের নৌকায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সংবলিত ব্যানারও ছিঁড়ে ফেলা হয়।
এ ঘটনায় নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম দায় চাপিয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান প্রার্থীর ওপর। তিনি বলেন, ‘আমার জনপ্রিয়তা দেখে লাঙ্গলের লোকজন পরিকল্পনাভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’
অপরদিকে জাপার লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী আশরাফ আলী বলেন, ‘টিটুলের অভিযোগ ভিত্তিহীন। টিটুল দুবার চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষকে নানাভাবে হয়রানি করেছে। ফলে তার জনপ্রিয়তায় ধস নেমেছে। আমার আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে টিটুল ও তার লোকেরা সাধারণ মানুষের মনে আমার বিরুদ্ধে বিদ্বেষ তৈরি করতে পরিকল্পিতভাবে গভীর রাতে নিজেরাই নৌকা পুড়িয়ে আমার ও আমার কর্মী-সমর্থকের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।’
আশরাফ আলী প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনে সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে গঙ্গাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুশান্ত কুমার সরকার বলেন, নৌকা পোড়ানোর ঘটনায় তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাকিবুল ইসলামকে থানায় আনা হয়েছে। ঘটনার পর এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেখানে স্বাভাবিক পরিবেশ বিরাজ করছে।’
শনিবার রাতের ঘটনা সম্পর্কে স্থানীয় বাসিন্দা নার্গিস বেগম বলেন, ‘রাত ২টার দিকে দেখি রাস্তার মাঝখানে আগুন জ্বলতেছে। বাড়ি থেকে বের হয়ে দেখি নৌকার মাঝখানে আগুন। এ সময় কয়েকজন লোক দৌড় দিয়ে পালিয়ে যায়।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা বদরুল আলম বাচ্চু বলেন, ‘আমরা রাত ২টার দিকে এলাকার লোকজনের চিৎকার চেঁচামেচি শুনে বাইরে এসে দেখি নৌকায় আগুন লেগেছে। কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে আগুন নিবিয়ে নৌকাটি রাস্তার মাঝ থেকে সরিয়ে রাখে। তারপর থেকে এখানে পুলিশ পাহারা বসিয়েছে।’
নোহালী ইউনিয়নে শনিবার রাতে দ্বিতীয়বারের মতো প্রতীকের ওপর হামলা চালানো হয়। নৌকা ও লাঙ্গলের দুই প্রার্থীর অভিযোগ অনুযায়ী, ১০ ডিসেম্বর রাতে কচুয়া সর্দারপাড়া এতিমখানা মোড়ে নৌকা প্রার্থীর নির্বাচনী অফিসের আসবাবপত্র ও প্রতীক ভাঙচুর করা হয়। একই রাতে লাঙ্গলের নির্বাচনী অফিস, একটি টিভি ও প্রতীক ভাঙচুর এবং এক কর্মীকে পিটিয়ে আহত করা হয়।