বর্ণবাদবিরোধী ও নাগরিক অধিকার আন্দোলনের অন্যতম মার্কিন নেতা মার্টিন লুথার কিং। বলা হয়ে থাকে, জর্জ ওয়াশিংটন যুক্তরাষ্ট্রকে স্বাধীন করেছেন, আব্রাহাম লিংকন দিয়েছেন গণতন্ত্র, আর দেশটিকে সভ্য করেছেন মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র। তাঁর নেতৃত্বে কালো মানুষ পেয়েছেন সাদা মানুষের সমান অধিকার, আর সাদা নাগরিকেরা পেয়েছেন বর্ণবাদের অভিশপ্ত অহংকার থেকে মুক্তি।
মার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করে একটি ব্যাপটিস্ট চার্চের যাজক হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর তিনি কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকার নিয়ে কাজের সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৫৫ সালে মন্টগোমারিতে শুরু হয় ঐতিহাসিক বাস ধর্মঘট আন্দোলন। ঘটনার সূত্রপাত হয় সেই বছরের ১ ডিসেম্বর বাসের আসনে বসাকে কেন্দ্র করে। সে সময় দক্ষিণের অধিকাংশ রাজ্যেই বাসের সামনের দিকে বসার অধিকার ছিল না কালোদের।
প্রথম এ নিয়ম ভঙ্গ করে প্রতিবাদ করেন কৃষ্ণাঙ্গ একজন নারী। এটা ছিল সরকারি আইনের লঙ্ঘন। তাঁকে ১০ ডলার জরিমানা করা হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে মার্টিনসহ অন্য ধর্মযাজকেরা বাস সার্ভিস বর্জনের সিদ্ধান্ত নেন। টানা ৩৮১ দিন চলে এই বর্জন আন্দোলন। অবশেষে সুপ্রিম কোর্ট এ নিয়মকে সংবিধানবিরোধী বলে ঘোষণা দেন।
এই আন্দোলনে জয়ের পর মার্টিন লুথার কিংয়ের নাম ছড়িয়ে পড়ে দেশসহ বিশ্বব্যাপী। এরপর তিনি দেশজুড়ে ফ্রিডম মার্চ করার পরিকল্পনা নেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শুরু হয় ওয়াশিংটন অভিমুখে পদযাত্রা। ১৯৬৩ সালের ২৭ আগস্ট ওয়াশিংটনের লিঙ্কন মেমোরিয়ালে সমবেত হয় প্রায় আড়াই লাখের বেশি মানুষ। এখানেই তিনি দেন তাঁর বিখ্যাত ভাষণ, ‘আমার একটি স্বপ্ন আছে।’
তাঁর এই বিখ্যাত ভাষণের প্রভাবেই ১৯৬৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিক অধিকার আইন এবং ১৯৬৫ সালে ভোটাধিকার আইন প্রণয়ন করা হয়।
কিংবদন্তি এই নেতা ১৯২৯ সালের ১৫ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টা শহরে এক কৃষ্ণাঙ্গ যাজক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।