হোম > ছাপা সংস্করণ

বেরোতে কোনো বাধা নেই তবু কারাগারে নাছির

সোহেল মারমা, চট্টগ্রাম

ডাবল, ট্রিপল খুনসহ ৩৬টি মামলার আসামি ছিলেন তিনি। ৩১ মামলায় খালাস পেয়ে গেছেন, দুটির সাজার মেয়াদ ভোগ করে ফেলেছেন। বাকি তিন মামলায় জামিন পেয়েছেন। এরপরও কারাগার থেকে বের হচ্ছেন না তিনি। আগামী এপ্রিলে কারাগারে দুই যুগ পূর্ণ হচ্ছে তাঁর।

এই ব্যক্তির নাম নাছির উদ্দিন। চট্টগ্রামের একসময়কার দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার। ইচ্ছে করলেই তিনি যেকোনো সময় কারাগার থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন। তারপরও কেন বের হচ্ছেন না, সেটাই প্রশ্ন। সূত্র বলছে, নিরাপত্তার কারণে একটি মহলের সবুজ সংকেত না পাওয়া পর্যন্ত কারাগারেই থাকতে চাইছেন বর্তমানে ৫৮ বছর বয়সী নাছির।

জানতে চাইলে নাছিরের আইনজীবী মনজুর মোরশেদ আনসারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার মক্কেল সব মামলায় জামিনে আছেন। কোনো কারণে তিনি বের হতে চাইছেন না। তাই পিডব্লিউ (কারাগারের আসামিকে আদালতে হাজির করার আবেদন) দিয়ে উনি কারাগারে রয়ে গেছেন।’

তবে ভিন্ন কথা বলছেন নাছিরের ছোট ভাই জিয়া উদ্দিন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা উনাকে বের করে নিয়ে আসতে চাই। সরকার যদি সেই সুযোগ না দেয় তাহলে কীভাবে বের করব।’

মামলা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালের ৬ এপ্রিল গ্রেপ্তার হন নাছির। তখন তিনি টগবগে এক যুবক। গ্রেপ্তারের পর প্রথমে চট্টগ্রাম কারাগারে ও পরে নোয়াখালী কারাগারে স্থানান্তর করা হয় তাঁকে।

গ্রেপ্তার অভিযানে অংশ নেওয়া ও বর্তমানে সিএমপিতে কর্মরত এক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ১৯৯৭ সালের প্রথম দিকে চট্টগ্রাম কলেজসংলগ্ন এলাকায় নাছিরকে ধরতে একবার বড় অভিযান চালানো হয়। সে সময় নাছিরের লোকজন ভারী অস্ত্র দিয়ে কাউন্টার অ্যাটাক করেছিল।

সন্ত্রাসীদের পক্ষ থেকে তখন প্রায় দেড় হাজার গুলি ছোড়া হয়। পুলিশের দুটি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপরও তাঁকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। একই বছরের শেষের দিকে আবারও সেখানে অভিযান চলে। ওই অভিযানে ৭/৮টি অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। সে সময় বিডিআর সেলিমসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হলে আবারও ফসকে যান নাছির। সর্বশেষ ১৯৯৮ সালের ৬ এপ্রিল একটি বড় অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রাম কলেজ হোস্টেলের ছাত্রাবাস থেকে নাছিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, চট্টগ্রামে আর্মসভিত্তিক ক্যাডার রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতেন নাছির। তাঁর সংগ্রহে ছিল একে ৪৭, এসএমজি, এলএমজিসহ নানা অত্যাধুনিক অস্ত্র। এ ধরনের অস্ত্রভান্ডার তখন কারোরই ছিল না। মূলত চকবাজারে বসেই আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণ করতেন নাছির।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সবার কাছে মূর্তিমান আতঙ্ক সেই নাছির বর্তমানে মাত্র তিনটি মামলার বিচারের শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছেন। এর মধ্যে সর্বশেষ ১০ মার্চ দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে চলা একটি মামলায় তাঁকে নোয়াখালী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে চট্টগ্রাম আদালতে আনা হয়। বর্তমানে তাঁকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।

আদালত সূত্র বলছে, নাছিরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় ৩৬টি মামলা হয়েছিল। এর মধ্যে অধ্যক্ষ গোপাল কৃষ্ণ মুহুরী, হাটহাজারী ট্রিপল মার্ডার, চট্টগ্রাম পলিটেকনিকে জমির উদ্দিন হত্যা মামলাসহ বেশির ভাগ মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণ হয়নি। এসব চাঞ্চল্যকর মামলায় সাক্ষী না পাওয়ায় তিনি খালাস পেয়েছেন। বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে ফটিকছড়ি ও ভুজপুর থানার তিনটি হত্যা মামলা। এর একটি মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে ও বাকি দুটি যুগ্ম জেলা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। ১৯৯২ সালে ফটিকছড়িতে দুজনকে হত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনার মামলায় সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন একমাত্র সাক্ষী। ২০১৭ সালের মে মাসে সাবেক মন্ত্রী এই মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। এর পর থেকে মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণ পর্বে থাকলেও কোনো সাক্ষ্য হচ্ছে না। সর্বশেষ গত ১০ মার্চ দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এই মামলার তারিখ ছিল। সে সময় নোয়াখালী কারাগার থেকে শিবির ক্যাডার নাছিরকে চট্টগ্রামে আনা হয়।

দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আইয়ুব খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ১০ মার্চও মামলায় কোনো সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি। সাক্ষী না থাকায় আদালত বসেনি। নাছিরের বিরুদ্ধে চলমান ফটিকছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আলী আবদুল্লাহসহ আরও দুটি মামলায়ও কোনো সাক্ষী পাওয়া যাচ্ছে না বলে আইনজীবীরা জানান।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ