হোম > ছাপা সংস্করণ

দায় কার?

সম্পাদকীয়

ভাবা যায় না, এমন একটা ঘটনা ঘটে গেল! সরকারি ওয়েবসাইট থেকে লাখ লাখ মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়ে গেছে। যে তথ্যগুলো ফাঁস হয়েছে, তা একজন মানুষের একান্ত গোপনীয় তথ্য, অথচ অবহেলায় তা চলে গেল ইন্টারনেটের উন্মুক্ত জগতে। কারও পূর্ণ নাম, ফোন নম্বর, ই-মেইল, জাতীয় পরিচয়পত্র—সবই এখন অন্যের দখলে।

সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে তথ্য ফাঁস হচ্ছে, অথচ সেই প্রতিষ্ঠান কিছু জানতই না। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অনলাইন সংবাদমাধ্যম টেকক্রাঞ্চ খুঁজে বের করেছে—সরকারি একটি ওয়েবসাইট থেকেই ফাঁস হচ্ছে এই তথ্য।

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব স্বীকার করে নিয়েছেন বিষয়টি। বলেছেন, ‘সরকারি বিভিন্ন ওয়েবসাইট নানা ক্ষেত্রে এনআইডির সার্ভারে যুক্ত হয়ে তথ্য নিয়ে থাকে। যারা তথ্য নেয়, তাদের ওয়েবসাইটগুলোর নিরাপত্তার দুর্বলতা থাকতে পারে।’

সচিব মহোদয় নিশ্চিত, এনআইডি থেকে সরাসরি তথ্য ফাঁস হওয়ার সুযোগ নেই। মেনে নেওয়া গেল, এনআইডি থেকে সরাসরি তথ্য ফাঁস হচ্ছে না। কিন্তু তাতে কি স্বস্তি পাওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো? আরও হতাশাজনক কথা বলেছেন তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেছেন, ‘সরকারি কোনো ওয়েবসাইট হ্যাক হয়নি।’ মন্ত্রীর এই কথা আশাজাগানিয়া হতে পারত। ভাবা যেতে পারত, যাক বাবা, হ্যাক হয়নি! কিন্তু এরই সঙ্গে মন্ত্রী মহোদয় যোগ করেছেন, ‘ওয়েবসাইটটির দুর্বলতার জন্য নাগরিকদের তথ্য উন্মুক্ত ছিল।’ এবার ভাবুন, কী অনর্থেরই না সৃষ্টি হয়েছে! একজন মন্ত্রী খুশি থাকছেন শুধু এই কারণে যে সিস্টেমে ঢুকে চুরি করে তথ্য নেওয়া হয়নি, ঘরে এসে কেউ চুরি করে নিয়ে যায়নি। কিন্তু আসল কথাটি কি বুঝতে পারছেন মাননীয় মন্ত্রী? হ্যাক হোক আর না-ই হোক, তথ্যগুলো ছিল উন্মুক্ত।

উন্মুক্ত হয়ে যাওয়া তথ্য হ্যাকের মাধ্যমে হলো নাকি ওয়েবসাইটের দুর্বলতার কারণে হলো, তাতে কি আদৌ কিছু আসে যায়? সাইবার সিকিউরিটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটা আমাদের মন্ত্রী-সচিব মহোদয়েরা কি জানেন না? সংবেদনশীল তথ্যগুলো ফাঁসের মাধ্যমে পোশাক পরিহিত মানুষের যেন সবার সামনে নগ্ন করে ছাড়া হলো!

এখন যদি প্রশ্ন ওঠে, আসলে সরকারি ওয়েবসাইটগুলো কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচ করে তৈরি করার পর তার দুর্বলতা আবিষ্কার করার দায় কে নেবে? তাহলে কী বলবেন প্রতিমন্ত্রী এবং সচিব সাহেব? কারা এমন এক ওয়েবসাইট বানাল, যা সবার সামনে উন্মুক্ত? জনগণের কাছ থেকে তথ্য নেওয়া হচ্ছে, অথচ সে তথ্যগুলো নিরাপদ থাকবে না? বাংলাদেশের সংবিধানের ৪৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী ব্যক্তির গোপনীয়তার অধিকার মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে বিবেচিত হয়। সংবিধানের সেই ধারাটি লঙ্ঘন করা হয়েছে।

মানুষের সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে। এই দায় সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং তাদের কর্তারা এড়াতে পারেন না। কঠোর শাস্তি তো দরকারই। সেই সঙ্গে আপডেটের মাধ্যমে দুর্বলতাগুলো দূরও করতে হবে। সাইবার সিকিউরিটি কীভাবে উন্নত করা যায়, তার সুরাহা না হলে এ রকম দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে। বিশাল এক হতাশার জন্ম দিল কাণ্ডজ্ঞানহীন এই ঘটনাটি। 

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ