হোম > ছাপা সংস্করণ

জুতাপেটার শিকার প্রধান শিক্ষক

সম্পাদকীয়

খবরটি হলো, একজন শিক্ষককে প্রকাশ্যে জুতাপেটা করা হয়েছে। তা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে উপজেলা শিক্ষক সমিতি। তার পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলে। ব্যাপারটা কিছু বোঝা গেল?

আরও পরিষ্কার করে বলি। ভোলার লালমোহনের দেবীরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কবির হোসেন হয়েছেন এই ঘটনার শিকার। বদরপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আসাদ উল্লাহ মেলকারের ছেলে রাসেল মেলকার মিথ্যা অভিযোগ তুলে শিক্ষককে হুমকি দেন। দেবীরচর বাজারে তাঁকে ডেকে নেন কবির হাওলাদার নামে এক ব্যক্তি। এরপর সেই বাজারে প্রকাশ্যে শিক্ষককে জুতাপেটা করেন চেয়ারম্যানের ভাগনে-ভাতিজারা। শিক্ষক কবির হোসেন বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

রাসেল মেলকার তাঁর ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আর থানার পরিদর্শক জানিয়েছেন, শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার ঘটনার কোনো অভিযোগ তাঁরা পাননি। পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দুটো ব্যাপারে খটকা যাচ্ছে না। ১. প্রধান শিক্ষক যদি প্রকাশ্যে বাজারের মধ্যে হামলার শিকার হয়ে থাকেন, তাহলে কি কোনো প্রত্যক্ষদর্শী থাকবে না? তাঁদের কাছে জিজ্ঞেস করলেই তো প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে পড়বে। নাকি ক্ষমতার কাছে নতজানু হয়ে প্রত্যক্ষদর্শীরা ইতিমধ্যেই গর্তে লুকিয়েছেন? ২. প্রধান শিক্ষক কী কারণে হাসপাতালে শুয়ে আছেন, সেই খোঁজ নেওয়া যায় কর্তব্যরত চিকিৎসকদের কাছ থেকে। তিনি নিশ্চয়ই অবকাশ যাপনের জন্য সমুদ্রতট কিংবা পাহাড়ে না গিয়ে হাসপাতালে একটা সিট বুক করবেন না। যদি মারপিটের কারণে হাসপাতাল বাস হয়, তাহলে নিশ্চয়ই কেউ বলবে না যে তিনি প্রবল জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন!

এই দুটো ব্যাপারে চাইলেই পুলিশ খোঁজ নিতে পারে এবং প্রকৃত তথ্য উদ্ঘাটন করতে পারে।

মুশকিল হলো, আমাদের দেশে শিক্ষকদের অসম্মান করার প্রবণতা বাড়ছে। অর্থনৈতিক বা বৈষয়িক দিক থেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষকেরা যে জীবনযাপন করেন, তাতে পয়সাওয়ালা লোকেরা তাঁদের অবজ্ঞা করার ধৃষ্টতা দেখান। মেধা, যোগ্যতার চেয়ে পয়সাই সম্মানের মাপকাঠি হয়ে যাওয়ায় এ অঘটনগুলো ঘটছে। অতীতে শিক্ষকদের যে সম্মান করা হতো, তা ছিল অর্জিত মূল্যবোধের বহিঃপ্রকাশ। সেই মূল্যবোধ এখন মৃত্যুর মুখোমুখি হয়ে আইসিইউতে রয়েছে। কখনো তার ঘুম ভাঙলে শিক্ষকেরা সম্মান পান নতুবা তাঁদের হেয় করা, অবজ্ঞা করা এবং অপমান করা চলতেই থাকে। আর তাতে কারও হৃদয়তন্ত্রীতে এতটুকু আঘাত লাগে না। এই অবস্থা একটি জাতির নৈতিক স্থূলতার প্রমাণ দেয়।

ভোলার লালমোহনে প্রধান শিক্ষক জুতাপেটার শিকার হয়েছেন কি হননি, সে প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়ার আগে যে প্রশ্নটি ওঠা উচিত, তা হলো, এ রকম একটি প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হলো কেন আমাদের? শিক্ষককে জুতাপেটা করা যায়, এ দৃশ্যটিই তো কল্পনা করা যায় না। এ তো বোধের অগম্য ব্যাপার!

কেনইবা শিক্ষককে জনসমক্ষে অপমান করার ঘটনায় পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করতে হবে? শিক্ষককে মর্যাদার আসনে বসানোর কথা যাঁদের, তাঁরা কার জন্য ঘাস কাটছেন?

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ