ওমরাহ শব্দের আভিধানিক অর্থ জিয়ারত করা ও কোনো জনবসতিপূর্ণ স্থান দেখার ইচ্ছা করা। নির্দিষ্ট স্থান থেকে ইহরাম বাঁধা, তাওয়াফ করা, সাফা-মারওয়াতে সায়ি করা এবং মাথা মুণ্ডন করা বা চুল কাটা—এই চার কাজকে ইসলামে পরিভাষায় ওমরাহ বলা হয়। ওমরাহকে হজে আসগর বা ছোট হজ বলা হয়।
কাতাদাহ (রহ.) বর্ণনা করেন, আমি আনাস (রা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, ‘নবী (সা.) কয়বার ওমরা করেছেন?’ তিনি বললেন, ‘চারবার। এক. জিলকদ মাসে, হুদায়বিয়ার সন্ধির সময়, যখন কাফিররা বাধা দিয়েছিল (এ সময়ে আসলে ওমরাহ না হলেও ওমরাহর সওয়াব অর্জিত হয়েছে; তাই সেটিকেও ওমরাহ গণ্য করা হয়েছে)। দুই. সন্ধির শর্ত মতে পরের বছর জিলকদ মাসে। তিন. জিরানার ওমরাহ, যখন তিনি হুনাইনের গনিমত বণ্টন করেছিলেন। চার. (বিদায় হজে)।’ আমি বললাম, ‘কয়বার হজ করেছেন?’ তিনি বলেন, ‘একবার।’ (বুখারি)
ওমরাহর ফজিলত অনেক। এর মাধ্যমে পাপের কাফ্ফারা হয়ে যায়। মহানবী (সা.) এরশাদ করেন, ‘এক ওমরাহ আরেক ওমরাহ পর্যন্ত সময়ের গুনাহের কাফ্ফারা। আর মাবরুর হজের প্রতিদান কেবল জান্নাত।’ (বুখারি) যে হজে সকল শর্ত ও নিয়মকানুন পূর্ণভাবে আদায় করা হয়, তাই মাবরুর হজ। কারও হজ কবুল হওয়ার নিদর্শন হলো, হজ থেকে এসে জীবন পাল্টে যাওয়া এবং পাপের পথ পরিহার করা। মহানবী (সা.) এরশাদ করেন, ‘তোমরা হজ ও ওমরাহ করতে থাক। কেননা তা অভাব ও পাপ দূর করে—যেমনভাবে কামারের হাপর লোহা, স্বর্ণ ও রুপার ময়লা দূর করে। আর মাবরুর হজের একমাত্র প্রতিদান জান্নাত।’ (তিরমিজি) তাই সামর্থ্যবানদের জন্য একাধিক ওমরাহ করতে ইসলামে বাধা নেই।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়