পাবনার সুজানগর পৌরসভার কর্মচারী আল আমিন হত্যা এবং তাঁর ভাই রজব আলীর আহতের ঘটনায় পৌরসভার সাবেক মেয়র, পৌর যুবলীগের সভাপতিসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। আতাইকুলা থানার ওসি জালাল উদ্দিন গতকাল বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় সুজানগর পৌরসভার রাধানগর এলাকা থেকে তাঁদের আটক করা হয়। আটকের পর গত মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত তাঁদের নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন সুজানগর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য তোফাজ্জল হোসেন তোফা (৫০), তাঁর ভাই পৌর যুবলীগের সভাপতি জুয়েল রানা (৪০), চর সুজানগর গ্রামের লিটন হোসেন (৪২) ও কাচারীপাড়া মহল্লার গৌর কুমার (৪৫)।
ওসি জালাল উদ্দিন বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের পর প্রথমে ডিবি পুলিশ তাঁদের আটক করে। পরে গত মঙ্গলবার দুপুরে থানায় হস্তান্তর করা হয়। নিহত আল আমিনের ভাই লাল্টু প্রামাণিক বাদী হয়ে গত মঙ্গলবার ৩৩ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন। মামলা তদন্ত করে দেখছি। ওই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
সুজানগর থানার ওসি আব্দুল হান্নান বলেন, অস্ত্রসহ চারজনকে আটকের ঘটনায় অস্ত্র আইনে গত মঙ্গলবার রাতে মামলা হয়েছে। সেই মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে গতকাল বুধবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার দুপুরে পাবনার আদালত থেকে বাড়ি ফেরার পথে সুজানগরের আতাইকুলা থানার সাদুল্লাপুর উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে পূর্ববিরোধের জেরে আল আমিন হোসেনকে (৩২) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর ভাই রজব আলী (৩৮) গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা জুয়েলের বিষয়ে পাবনা জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শিবলী সাদিক বলেন, ‘শুনেছি অস্ত্র ওর লাইসেন্স করা। আর হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে জুয়েল জড়িত কি না, নিশ্চিত নই। এরপরও আমাদের জেলা কমিটির আহ্বায়ক এই মুহূর্তে বিদেশে অবস্থান করছেন, তিনি দেশে ফিরলে তাঁর সঙ্গে আলোচনা করে যদি দলীয় শৃঙ্খলার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়, তাহলে জুয়েল রানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
অপর দিকে সুজানগর পৌরসভা কর্মচারী হত্যার প্রতিবাদে শোক জানিয়ে কালো ব্যাচ ধারণ করে তিন দিনের কর্মসূচি নিয়েছে।
পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা বলেন, ‘আমার কর্মচারী হত্যাকাণ্ডে জড়িত সব খুনিকে আটক না করা হলে সুজানগর অচল করে দেওয়া হবে।’