যানজটে চরম ভোগান্তিতে আছেন শ্যামপুরের হাজী খোরশেদ আলী সরদার রোডের বাসিন্দারা, যা এলাকাবাসীর কাছে কমিশনার রোড হিসেবে পরিচিত। ঢাকা-মাওয়া হাইওয়ে রোডের পূর্বদিকে অবস্থিত কমিশনার রোড। রাস্তাটি জুরাইন থেকে শনির আখড়া ২৪ ফুট পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ। কিন্তু রাস্তাটিজুড়ে সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত থাকে চরম যানজট। বিশেষ করে দুপুর থেকে এই যানজট তীব্র আকার ধারণ করে। এই রাস্তায় চলাচলরত কয়েক শ ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত রিকশাই যানজটের মূল কারণ বলে এলাকাবাসী জানান।
রাস্তাটি গত দুই বছর আগে সংস্কার করে প্রশস্থ করা হয়। কিন্তু নিষিদ্ধঘোষিত ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় ও খেয়ালখুশিমতো চালানোর ফলে এই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে, যা থাকে দীর্ঘ সময়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এখানে ছোট-বড় ইজিবাইক চলাচল করে প্রায় আড়াই শ। এসব ইজিবাইকের প্রায় চালকই অপ্রাপ্ত বয়স্ক। তাদের বেপরোয়া গতির কারণে প্রতিদিনই ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। এ ছাড়া রয়েছে কয়েক শ ব্যাটারিচালিত রিকশা। এই ছোট যানবাহনগুলো দুই-তিনটা পাশাপাশি করে রাখায় প্রায় অর্ধেক রাস্তা বন্ধ হয়ে থাকে। ফলে যানজট লেগে থাকে রাস্তাজুড়ে। বিশেষ করে দুপুরের পর রাস্তাটির প্রবেশমুখে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সেই সঙ্গে ট্রাক, পিকআপ, প্রাইভেট কারসহ অন্য বড় যানবাহন প্রবেশ ও বের হতে হলে অপেক্ষা করতে হয় দীর্ঘ সময়। এতে বিশেষ করে রোগীবাহী গাড়িকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।
অ্যাম্বুলেন্সচালক আলামিন গতকাল মঙ্গলবার জানান, যানজটের কারণে রোগী নিয়ে বের হতে পারছি না। এতে রোগীর জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। সালাম, আলিম, জান্নাতসহ কয়েকজন পথচারী জানান, ছোট গাড়িগুলো ইচ্ছামতো রাখায় ও ঘোরানোর ফলে যানজট বেড়ে যায়। অনেক সময় হেঁটে চলাও কষ্টকর হয়ে পড়ে।
ইজিবাইকচালক রনি, শরিফসহ অনেকে জানান, কোনো কাজ না থাকায় বাধ্য হয়ে সহজে ভাড়ায় পাওয়া ইজিবাইক চালান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন দোকানদার জানান, যানজটের কারণে এলাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যেরও ক্ষতি হচ্ছে। এ বিষয়ে ইজিবাইক-অটোরিকশার দায়িত্বরত লাইনম্যান আসলাম বলেন, ‘যানজট রোধে দিনরাত চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিন্তু গাড়ির চাপ বেড়ে যাওয়ায় অনেক সময় নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে।’
এ প্রসঙ্গে ওয়ারী জোনের ট্রাফিক পরিদর্শক (টিআই) গোলাম মাওলা কবির জানান, তাঁরা প্রধান সড়কে যানজট নিয়ন্ত্রণ করেন। গলির ভেতরে তাঁরা যান না। তবে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখবেন।