গানের মেধাস্বত্ব নিয়ে অনেক দিন ধরেই কথা বলে আসছেন শিল্পীরা। বিভিন্ন মাধ্যমে শিল্পীদের যে গানগুলো প্রচার হয়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাঁর সম্মানী বুঝে পান না তাঁরা। অনেকেই জনপ্রিয় গানগুলো বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করলেও শিল্পীদের রয়্যালটি দেওয়ার ব্যাপারটি এড়িয়ে যান। তবে এখন সময় এসেছে শিল্পীদের মেধাস্বত্ব বুঝে পাওয়ার। কয়েক বছর ধরে বিষয়টি নিয়ে বেশ জোরেশোরে কাজ করছে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস।
গত বছরের ডিসেম্বরে বাউলসম্রাট শাহ আবদুল করিমের ৪৭২টি গানের মেধাস্বত্ব নিবন্ধন করে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস। গানগুলো পরে ‘শাহ আবদুল করিম ডটকম’ নামের ওয়েবসাইটে সংরক্ষণ করা হয়। গত এক বছরে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যতবার শ্রোতারা শাহ আবদুল করিমের গানগুলো শুনেছেন, তার রয়্যালটি হিসেবে জমেছে ১২ হাজার ডলার। সেখান থেকে ১০ হাজার ডলার তুলে দেওয়া হলো বাউলসম্রাটের ছেলে শাহ নূর জালালের হাতে।
গতকাল জাতীয় আর্কাইভস ভবন সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে চেকটি হস্তান্তর করেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। তিনি বলেন, ‘এক বছরে এত পরিমাণ রয়্যালটি জমেছে, এটা ভাবাও যায় না। প্রতিবছর এই অর্থ আসতেই থাকবে। অথচ মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের এই ব্যাপারটি যদি আরও ২০ বছর আগে করা যেত, কী পরিমাণ অর্থ তাঁর পরিবার পেত! এটা একজন শিল্পীর পরিবারের জন্য অনেক কিছু।’
শাহ আবদুল করিমের ছেলে শাহ নূর জালাল বলেন, ‘সরকারি সহযোগিতায় আবদুল করিমের জীবনকর্ম সংরক্ষণের বন্দোবস্ত হয়েছে। তাঁর গানের রয়্যালটি আমরা বুঝে পাচ্ছি, এটা আমাদের জন্য আনন্দের খবর! আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল বাবার গানগুলো যেন কোনোভাবে বিকৃত না হয়। আমাদের সে চাওয়া পূরণ হয়েছে।’
প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, দেশের আরও ২০ জন শিল্পীর ওয়েবসাইট তৈরির কাজ চলছে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে দেশের কোনো শিল্পীকে শেষ বয়সে গিয়ে অর্থাভাবে অন্যের দ্বারস্থ হতে হবে না বলে মতপ্রকাশ করেছেন শিল্পীরা।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন সংগীতশিল্পী খুরশিদ আলম, রফিকুল আলম, সুজিত মোস্তফা, মনির খান, হামিন আহমেদ, গীতিকবি আসিফ ইকবাল, আইয়ুব বাচ্চুর স্ত্রী চন্দনা ও অ্যান্ড্রু কিশোরের স্ত্রী লিপিকা।