সিরাজগঞ্জে পুলিশের গাড়ি থামিয়ে ওয়াকিটকি, দুটি মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। তবে মামলায় আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে কি না কিংবা কতজনকে আসামি করা হয়েছে, তা জানাতে রাজি হয়নি পুলিশ।
বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, সড়কে ছিনতাইয়ের ঘটনায় গত বুধবার রাতে বগুড়ার সোনাতলা থানার উপপরিদর্শক আব্দুল খালেক বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন।
ঘটনার পরে ঘটনাস্থলের আশপাশের এলাকায় অভিযান চলছে। তবে এখন পর্যন্ত ছিনতাই হওয়া মালামাল উদ্ধার হয়নি। ছিনতাইকারীদেরও শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে সোনাতলা থানার কয়েকজন পুলিশ সদস্য ঢাকায় কাজ শেষে বগুড়ায় ফেরার পথে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কের কড্ডা এলাকায় ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন।
এসময় ছিনতাইকারীরা পুলিশের গাড়ি থামিয়ে ওয়াকিটকি, দুটি মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা ছিনিয়ে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা।
সোনাতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈকত হাসান জানান, গত ফেব্রুয়ারি মাসে সোনাতলা পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের এক ছাত্রী অপহৃত হয়। পরে ছাত্রীর বাবা থানায় অপহরণের মামলা করেন। গত সোমবার ছাত্রীর পরিবার জানতে পারে, মেয়েটি ঢাকায় অবস্থান করছে।
তাঁদের তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সোনাতলা থানা-পুলিশ অপহৃত স্কুলছাত্রীর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঢাকায় উদ্ধার অভিযানে যায়। অভিযান শেষে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে কড্ডা এলাকায় পৌঁছালে সড়কের পেছন থেকে তাঁদের মাইক্রোবাস লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করা হয়।
এ সময় মাইক্রোবাসের গ্লাস ভেঙে একটি পাথর ওই ছাত্রীর চাচার মাথায় লাগে। তাঁর চিৎকারে চালক গাড়ি থামিয়ে দেন। এ সময় ৭-৮ জন ছিনতাইকারী তাঁদের
ঘিরে ধরে। গাড়িতে থাকা পুলিশ সদস্যরা সাদা পোশাকে থাকায় তাঁদের পরিচয় দিলেও ছিনতাইকারী দল তা বিশ্বাস করেনি।
ছিনতাইকারীরা অস্ত্রের মুখে একটি ওয়াকিটকি, দুটি মোবাইল ফোন, টাকাসহ মালপত্র ছিনিয়ে নেয়। এ সময় কনস্টেবল কালাম হোসেন তাদের বাধা দিলে তাঁর মাথায় ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। আহত কনস্টেবল এবং অপহৃত ছাত্রীর চাচাকে হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তাঁরা দুজন সুস্থ রয়েছেন।
বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জানান, মহাসড়কে পুলিশের গাড়িতে ছিনতাইয়ের বিষয়টি জানার পর বগুড়া থেকে ডিবি পুলিশ ও সোনাতলা থানা-পুলিশ সিরাজগঞ্জে অভিযান চালাচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল বলেন, ‘এমন ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত। ছিনতাইয়ের পর থেকে ঘটনাস্থলের আশপাশের এলাকায় অভিযান চলছে। ছিনতাই হওয়া মালপত্র উদ্ধার ও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। জড়িতদের কেউ ছাড় পাবে না’
পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল আরও বলেন, রাতে মহাসড়কে টহলে থাকার কথা বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম থানা-পুলিশের। এ ঘটনায় কারও দায়িত্বে অবহেলা আছে কি না, সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।