বাড়িতে প্রবেশ করতেই দেখা গেল দেড় বছরের সন্তানকে কোলে নিয়ে বসে আছেন জোসনা খাতুন। কয়েকজন প্রতিবেশী তাঁকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। বাড়িজুড়ে চলছে মাতম। একটু দূরেই বড় সন্তান পাঁচ বছরের সোহানা খাতুন দাদির সঙ্গে কিছু একটা বলছিল। প্রথম দিকে কিছু বুঝতে না পারলেও বাবার অনুপস্থিতিতে সে বুঝেছে তিনি না ফেরার দেশে চলে গেছেন। বাবার কথা জিজ্ঞেস করতেই কেঁদে ফেলে সোহানা।
গত সোমবার সকালে একটি খাল থেকে সোহানার বাবা পির আলীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি কালীগঞ্জ উপজেলার কাষ্টভাঙা ইউনিয়নের সামছুল হকের ছেলে ও ওয়ার্ড যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পির আলী দুটি স্পর্শকাতর মামলার প্রধান সাক্ষী ছিলেন।
স্বজনেরা জানান, ছোট্ট সোহানাকে এ বছরই তার বাবা বাড়ির পাশের মরজাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়েছিলেন।
আলীর স্ত্রী জোসনা খাতুন বলেন, সংসারে কোনো ঝামেলা ছিল না। স্বামী কারও ক্ষতি করেননি। প্রতিদিন রাতে পেয়ারা বাগান পাহারা দিতে যেতেন আবার রাতেই ফিরতেন। ঘটনার দিন রাতে গিয়ে আর ফেরেননি। সকালে খালের পাড়ে তাঁর লাশ পাওয়া যায়।
জানা গেছে, বিভিন্ন সময় আসামিরা তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দিত। নিরাপত্তা চেয়ে গত ৪ ডিসেম্বর থানায় জিডিও করেছিলেন। এ ছাড়া গত ২৮ নভেম্বর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ফুটবল প্রতীক নিয়ে সদস্য পদে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছিলেন পির আলী।
কালীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মতলেবুর রহমান জানান, পির আলীর গলায় ফাঁসের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এটি হত্যা, নাকি আত্মহত্যা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ছাড়া বলা সম্ভব না। তবে হত্যার আসল রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা চলছে।