একটি মিথ্যা বা ভুল সংবাদ কিংবা ভুল তথ্য ডেকে আনতে পারে কঠিন বিপর্যয়। ভুল সংবাদে এমন ভুল সিদ্ধান্তও হয়ে যেতে পারে, যা অপূরণীয় ক্ষতি বয়ে আনে। সুতরাং সংবাদ বা তথ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্কতা কাম্য। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, যদি তোমাদের কাছে কোনো অনির্ভরযোগ্য ব্যক্তি কোনো সংবাদ নিয়ে আসে, তবে তোমরা এর সত্যাসত্য যাচাই-বাছাই করো। যাতে কোনো সম্প্রদায়ের ওপর অজ্ঞতাবশত আক্রমণ করে না বসো। এরপর তোমাদের নিজেদের কর্মকাণ্ডের জন্য নিজেরাই অনুতপ্ত হবে।’ (সুরা হুজুরাত: ৬)
এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, যদি কোনো নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি কোনো সংবাদ বা তথ্য দেন, তা গ্রহণ করতে সমস্যা নেই। তবে যদি বিভিন্ন আলামত থেকে বোঝা যায়, তার ভ্রম হয়েছে, সেটা ভিন্ন কথা। আয়াত থেকে এ-ও বোঝা যায়, ফাসেক বা অনির্ভরযোগ্য ব্যক্তি সংবাদ দিলে তা সঙ্গে সঙ্গে বর্জন করতে বলা হয়নি; বরং বলা হয়েছে, বিষয়টা সত্যাসত্য যাচাই করতে। সুতরাং গড়পড়তা সবার কথা গ্রহণ যেমন করা যায় না, তেমনি নাকচও করা যায় না।
আজকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহার যোগাযোগব্যবস্থাকে অনেক সহজ করে তুলেছে এ কথা যেমন সত্য, তেমনি তৈরি করেছে ভয়াবহ সংকটও। এসব প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বহু মানুষ বিভিন্ন ধরনের গুজব ছড়িয়ে সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। কিছু লোক আবার অন্যায়ভাবে কারও বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে। মানুষের ইজ্জত-সম্মান ধুলোয় মিশে যাচ্ছে ঠুনকো কোনো কারণে। কত উড়ো চিঠি, উড়ো মেসেজ ধ্বংস করে দিচ্ছে সোনার সংসার।
আমরা যদি বাস্তবজীবনে খবর গ্রহণের ক্ষেত্রে কোরআনের নির্দেশনা মেনে চলি, তবে অনেক বিচিত্র ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পাব। আমাদের জীবন হবে সুন্দর, নিষ্কণ্টক ও প্রাণোচ্ছল।
লেখক: শিক্ষক ও হাদিস গবেষক